মধ্যপ্রাচ্যগামী গাঁজার চালান: তদন্তে ডিবি
২১ মার্চ ২০১৯ ১৪:৩৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মধ্যপ্রাচ্যগামী বিমানের যাত্রীর কাছ থেকে গাঁজা উদ্ধারের মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান গুরুত্ব বিবেচনা করে মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
গত সোমবার (১৮ মার্চ) দুবাইগামী বিমানের যাত্রীর তোষকের ভেতর থেকে গাঁজা উদ্ধারের ঘটনায় নগরীর পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের হয়। বিমানবন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এপিবিএন’র উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
বুধবার মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব ডিবিকে দিয়ে সিএমপি কমিশনার লিখিত নির্দেশনা জারি করেন বলে জানিয়েছেন পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল কান্তি বড়ুয়া।
ওসি সারাবাংলাকে বলেন, ‘কমিশনার স্যার মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব ডিবিকে দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা আমরা গতকাল (বুধবার) পেয়েছি। আমরা ডিবি’র তদন্তকারী কর্মকর্তাকে মামলার নথিপত্র বুঝিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) এসএম মোস্তাইন হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলাটির তদন্তভার ডিবিকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আগে হয়েছে। শুরু থেকেই আমরা মামলাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং ছায়া তদন্ত শুরু করেছি। এখন মামলার নথিপত্র বুঝে নিয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করব।’
গত সোমবার শাহ আমানত বিমানবন্দরে আটক যাত্রী মো. রুবেল প্রকাশ আল আমিনের (৩৬) বহন করা তোষকের ভেতরে পাওয়া যায় সাড়ে পাঁচ কেজি গাঁজা। এসময় তাকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে আসা মো. নিজাম উদ্দিন (৩১) নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
বিমানবন্দরে দায়িত্বরত সিভিল এভিয়েশন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, রুবেল দুবাইগামী বিমানের যাত্রী ছিলেন। বিমানটি দুবাই হয়ে মাস্কাটে যাবার কথা ছিল। রুবেল ওমানপ্রবাসী। আটকের পর রুবেল স্বীকার করে- সে গাঁজাগুলো মাস্কাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছিল।
এদিকে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) শাহ আমানত বিমানবন্দরে আবুধাবীগামী আরেক বিমানের যাত্রীর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ইয়াবা ও গাঁজা পাওয়া যায়। মো.জমির উদ্দিন (৩১) নামে ওই যাত্রীর জুতার সোলের ভেতর থেকে ৫৪০ পিস ইয়াবা ও ২০০ গ্রাম গাঁজা জব্দ করা হয়েছে।
এই ঘটনায়ও বিমানবন্দরে দায়িত্বরত এপিবিএন ক্যাম্পের এস আই আবুল কালাম বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
প্রথম মামলার ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় মামলার তদন্তভারও ডিবিতে যাচ্ছে বলে সিএমপি সূত্র জানিয়েছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোস্তাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আশা করছি, সহজেই এই মামলার রহস্য আমরা উদঘাটন করতে পারব। ওমানে যারা আছেন তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাব। আমরা ইন্টারপোলের কাছেও যাব। মামলা তদন্তের প্রয়োজনে ওমানে যাব।’
তবে বাহকদের গ্রেফতারের সূত্র ধরে মাদক চালানের নেপথ্যে থাকা গডফাদারদের ধরার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সমিতি, ওমানের সভাপতি ইয়াছিন চৌধুরী।
তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে যাদের ধরা হয়েছে, তাদের ছবি আমি দেখেছি। আমার মনে হয়েছে তারা ক্যারিয়ার। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, ক্যারিয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাংলাদেশে গডফাদার কারা, ওমানে কাদের কাছে মাদক নেওয়া হচ্ছিল, সেটা যেন বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কয়েকটি চালান ধরা পড়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের প্রবাসীদের এবং দেশের ভাবমূর্তি কিছুটা উজ্জ্বল হয়েছে। গডফাদারদের ধরতে পারলে এটা পুরোপুরি বন্ধ হবে।’
সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ