বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র: কয়লা কিনতে আসছে পুনঃদরপত্র

ঢাকা: দ্বিতীয়বারের মতো বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানিতে ব্যর্থ হলো সরকার। চড়া দাম হাওয়ায় ৫১২ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই কেন্দ্রটির জন্য পুনরায় ৮ লাখ টন কয়লা আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করতে বিদ্যুৎ বিভাগের সম্মতি চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। সম্প্রতি এই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এর আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর বড়পুকুরিয়া কেন্দ্রটির জন্য এক লাখ টন কয়লা আমদানি করতে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছিল পিডিবি। কেন্দ্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় চালাতে দৈনিক ৫ হাজার ২০০ টন কয়লা প্রয়োজন।

পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ এ প্রসঙ্গে সারাবাংলাকে বলেন, ‘দরপত্রে আমরা যে মূল্য প্রস্তাব পেয়েছি, তার দাম বেশি। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে এর চেয়ে কম দামে কয়লা পাওয়া যাচ্ছে। তাই আমরা পুনরায় দরপত্র আহ্বানের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে চিঠি দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে এখন টন প্রতি ৯৫ থেকে ১০০ মার্কিন ডলারে কয়লা পাওয়া যাচ্ছে।’

বিদ্যুৎ বিভাগ ও পিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রটির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করার পর সিঙ্গাপুরভিত্তিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নোবেল রিসোর্সেস ইন্টারন্যাশনাল এবং ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড দরপত্র জমা দেয়। বাংলাদেশের পারটেক্স কোল লিমিটেড এই দু’টি কোম্পানির স্থানীয় প্রতিনিধি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এই দু’টি কোম্পানির পক্ষ থেকে যে দর প্রস্তাব করা হয়েছে, তা অনেক বেশি। ভিটলের দেওয়া প্রস্তাবে প্রতি টন ২৮১ দশমিক ৫৭ মার্কিন ডলার এবং নোবেল রিসোর্সেসের প্রস্তাবে প্রতি টন ১৯৬ দশমিক ৪৭ মার্কিন ডলার দর দেওয়া হয়েছে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির মতে, এই কয়লা কিনে বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছাতে টনপ্রতি খরচ অনেক বেশি পড়বে।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা জানান, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫১২ মেগাওয়াট এই কেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লায় প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৩৬ কোটি মার্কিন ডলার। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে এই প্রস্তাবে অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী।

জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে উৎপাদিত কয়লার চেয়ে আমদানি করা কয়লার দাম অনেক বেশি। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি কর্তৃপক্ষ পিডিবিকে টন প্রতি দাম ১৩০ মার্কিন ডলারে কয়লা সরবরাহ করত। সেখানে ভিটল টন প্রতি ২৮২ দশমিক ৯১ মার্কিন ডলার দর প্রস্তাব করেছে। এছাড়া এর সঙ্গে যোগ হবে এফওবি (ফ্রি অ্যান্ড ব্রেড) ১১৮ মার্কিন ডলার, মালবহনের খরচ ৭ ডলার, মালামাল ওঠা-নামা, ইনস্যুরেন্স, বন্দর খরচসহ স্থানীয় পরিবহন খরচ ৮৭ দশমিক ৪৭ ডলার। যদিও কোম্পানিটি পরবর্তী সময়ে তাদের সংশোধিত প্রস্তাবে টনপ্রতি কয়লার দাম ১ দশমিক ৩৪ মার্কিন ডলার কম মূল্য উল্লেখ করে।

সারাবাংলা/এইচএ/এমএনএইচ

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি