মোংলায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ কম
২ মে ২০১৯ ১৯:৩১
বাগেরহাট: অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় মোংলা বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেল পর্যন্তও আশ্রয়কেন্দ্রে কোনো লোকজন যাওয়া শুরু করেনি।
৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর থেকে মোংলা বন্দর ও পৌর শহর ছাড়াও গ্রাম-গঞ্জে মাইকিং করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। তবে মাইকিংয়ের পরও কোনো লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মোংলা বন্দরসহ উপকূলীয় এলাকায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি হলেও সকাল থেকে এখানে রৌদ্রকরোজ্জ্বল স্বাভাবিক আবহাওয়া বিরাজ করছে। ফলে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ঝড়ের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। সবাই স্বাভাবিক কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। কারও মধ্যে ঝড়ের ভীতিও তেমন নেই। তাই আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজনের যাওয়ার আগ্রহ কম।
তবে আবহাওয়া একটু খারাপ হলেই লোকজন কেন্দ্রে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
মোংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) খন্দকার মো. রবিউল ইসলাম জানান, এখানকার ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্র পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয়েছে। সেখানে আলো, শুকনো খাবার, ওষুধ ও সুপেয় পানিও মজুদ করা হয়েছে। এমনভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে যাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান সবচেয়ে কম হয়।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এ কে এম ফারুক হাসান জানান, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি হওয়ার পর থেকে বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্দরে জাহাজ আগমন-নির্গমন ও অবস্থানরত ১৫টি জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস কাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বন্দরের ফেয়ারওয়ে, হাড়বাড়িয়া ও পশুর চ্যানেলে অবস্থানরত সব বিদেশি জাহাজসহ দেশি নৌযানগুলোকে নিরাপদে অবস্থান নিতে নির্দেশনা দিয়েছে বন্দরের হারবার বিভাগ।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লে. ইমতিয়াজ আলম জানিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সংস্থাটির ১২টি স্টেশন ২১টি জাহাজ ও ২ হাজার সদস্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মোংলা-পায়রায় ৭, চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত
সুন্দরবন পূর্ব বন কর্মকর্তা মেহেদী মাসুদ জানান, সুন্দরবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলি নিয়ে নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিয়েছে বনবিভাগ।
এদিকে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার মোংলায় এক সভা শেষে জানান, নদীতে যারা এখনও মাছ ধরছে তাদের দ্রুত সরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র পরিস্কার করে বসবাসের উপযোগী করে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এখানকার মানুষ ঝড়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে বসবাস করে টিকে থাকে। সর্বোপরি সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করছে। সব কিছুই ধৈর্যসহকারে মোকাবিলা করা হবে।’
সারাবাংলা/এমও