গতি কমেছে, মধ্যরাতে খুলনা-সাতক্ষীরায় আঘাত হানতে পারে ফণী
৩ মে ২০১৯ ১৯:৩৮
ঢাকা: ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২১০ কিলোমিটার গতিবেগের ফণী এখন ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। তবে গতি কমলেও বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে রয়েছে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা। শুক্রবার (৩ মে) বাংলাদেশ সময় দিবাগত মধ্য রাতে এই ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে।
শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সচিবালয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ। ব্রিফিংয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন- ফণীর ছোবলে ঝুঁকিতে বাংলাদেশ, বইছে ঝড়ো হাওয়া, জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
ব্রিফিংয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক বলেন, ফণীর প্রভাবে সারাদেশ এখন মেঘাচ্ছন্ন। বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া রয়েছে বিভিন্ন জেলায়। মধ্যরাতে এই ঝড়ো হাওয়ার গতি বাড়বে। এসময় ফণীর কেন্দ্র বাংলাদেশের খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে আমরা আশঙ্কা করছি।
শামছুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ফণীর কারণে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির প্রবণতা আগামীকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টির গতি কমে গেলেও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আরও পড়ুন- ঘূর্ণিঝড় ফণির প্রভাব: বাগেরহাটে বেড়িবাঁধ ভেঙে ৪ গ্রাম প্লাবিত
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব মোকাবিলায় উপকূলীয় ১৯টি জেলার ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭৯৫ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আরও তিন থেকে ছয় লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হতে পারে। তবে ফণীর গতি কমে আসায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনীহা প্রকাশ করছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, আমাদের উপকূলে ৪ হাজার ৭১টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। এর বাইরে স্কুল-কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ভবনও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত জেলা প্রশাসন থেকে কোনো দুঃসংবাদ আমরা পাইনি।
আরও পড়ুন- সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এখন পর্যন্ত ফণী মোকাবিলায় আমরা সক্ষম হয়েছি। সম্ভাব্য উপদ্রুত জেলাগুলোতে খাবার ও নগদ টাকা পৌঁছে দেওয়া আছে। আরও ৪০ কোটি টাকা মজুত আছে। ফণীর কারণে যেন কোনো প্রাণনাশের ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে সরকারি সফরে লন্ডনে রয়েছেন। সেখান থেকেই তিনি সার্বক্ষণিক ফণীর মনিটরিং অব্যাহত রেখেছেন, আমাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও ঘূর্ণিঘড় ফণী নিবিড়ভাবে মনিটরিং করছে।
আরও পড়ুন- ঘূর্ণিঝড় ফণী: আবহাওয়া দফতরের সবশেষ আপডেট
ফণী আঘাত হানলে দুর্গতদের উদ্ধার তৎপরতা ও চিকিৎসাসেবা বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, উপকূলে উদ্ধার তৎপরতার জন্য নৌবাহিনীর ৩২টি জাহাজ প্রস্তুত আছে। এসব জাহাজে বিশুদ্ধ খাবার পানি, স্যালাইনসহ ওষুধ ও শুকনো খাবার মজুদ আছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে স্থলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জলপথে এসব জাহাজ কাজ করবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, উপকূলের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তায় সেনা সদস্য, কোস্টগার্ড, পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত আছে। এছাড়া, যারা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের ঘরবাড়ির সুরক্ষাতেও কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাবসহ আনসার-ভিডিপি তৎপর রয়েছে।
আরও পড়ুন-
উপকূলে ফণীর প্রভাব: ঝড়-বৃষ্টি শুরু
ফণী নিয়ে যা জানাচ্ছে সাইক্লোন.কম
ফণীতে সতর্ক দেশের বিমানবন্দরগুলো
উপকূলীয় ৯ জেলায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত
ফণী: পিরোজপুরের নদীগুলোতে পানি বাড়ছে
ফণীর প্রভাবে যাত্রীশূন্য সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল
ফণীর প্রভাবে দুই ফুট বেড়েছে পশুর নদীর পানি
‘ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি আছে’
শক্তি সঞ্চয় করছে ফণী, উপকূলের ১৯ জেলায় প্রস্তুতি
ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকায় বোরো ধান কেটে ফেলার পরামর্শ
ঘূর্ণিঝড় ফণী: সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোল রুম
ফণী মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের ১২ পদক্ষেপ, হটলাইন চালু
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর