দেশে ফিরেছেন ইয়াংগুনে বিমান দুর্ঘটনায় আহত ১০ বাংলাদেশি
১০ মে ২০১৯ ২৩:২৩
ঢাকা: দেশে ফিরেছেন মিয়ানমারে বিমান দুর্ঘটনায় আহত পাইলট, কেবিন ক্রু, গ্রাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার ও চার যাত্রী। শুক্রবার (১০ মে) রাত ১০টা ৩১ মিনিটে আহত ১০ জনকে নিয়ে বিমানের বিশেষ ফ্লাইট হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ জানিয়েছেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তিন যাত্রীকে রাজধানীর এপোলো হসপিটালে নেওয়া হচ্ছে। বিমানটির পাইলটকে নেওয়া হচ্ছে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে।
শাকিল মেরাজ বলেন, মিয়ানমারে দুর্ঘটনায় ১০ জন যাত্রী, পাইলট, কেবিন ক্রু ও গ্রাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারকে বিশেষ ফ্লাইটে আজ (শুক্রবার) দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এই ফ্লাইটে চার যাত্রী, দুই পাইলট, দুই কেবিন ক্রু ও দুই গ্রাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার দেশে ফিরেছেন।
এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, সচিব মো. মহিবুল হক, অতিরিক্ত সচিব মোকাব্বির হোসেন, বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিল আহতদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন।
বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। তাদের চিকিৎসায় যা ব্যয় হবে, সমস্ত দেবে বিমান। আহতদের ইচ্ছে অনুযায়ী, তাদের একজনকে (পাইলট) সিএমএইচ ও ৩ জনকে (ক্রু) এপেলো হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে বিমানের বিশেষ ফ্লাইট আহতদের দেশে ফিরিয়ে আনতে মিয়ানমারের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়ে যায়।
গত বুধবার (৮ মে) সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে বিমান বাংলাদেশের বিজি-০৬০ ফ্লাইটটি (ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ) অবতরণের সময় ইয়াংগুনের রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। উড়োজাহাজটিতে এক শিশুসহ ২৯ জন যাত্রী, ২ জন পাইলট ও ২ জন কেবিন ক্রু ছিলেন। বিমান জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত বিমান যাত্রীদের কেউ গুরুতর আহত হননি। তাদের কারোরই জীবনশঙ্কা নেই।
মিয়ানমারের বাংলাদেশ মিশন জানায়, দুর্ঘটনাকবলিত ওই বিমানের ১১ জনকে বিমানবন্দরেই প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৯ জনকে বিমানবন্দরের কাছাকাছি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। তবে তাদের কারো অবস্থাই গুরুতর নয়। রাতে আরেক বার্তায় বিমান জানায়, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ১৯ জনের মধ্যে ৪ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মিয়ানমারে দুর্ঘটনার তদন্তে কমিটি করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ৯ মে বিমানের চিফ অব ফ্লাইট সেফটি শোয়েব চৌধুরীকে প্রধান করে ছয় সদস্যের তদন্তকমিটি গঠন করা হয়।
উড়োজাহাজ সংকটে শিডিউল বিপর্যয়
এদিকে মিয়ানমারের ইয়াংগুনে বিমান দুর্ঘটনার কারণে শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সটি। উড়োজাহাজ সংকটের কারণে গত পাঁচদিনে মোট ১১টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (৮ মে) রাতে ইয়াংগুনে ড্যাশ-৮ দুর্ঘটনার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত চারটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া আগামী তিন দিনে (শুক্র-শনি ও রোববার) সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী রুটের আরও সাতটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এসব রুটে ছোট এয়ারক্রাফট না থাকায় বিমান কর্তৃপক্ষ ফ্লাইটগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে।
সূত্র জানায়, ফ্লাইট শিডিউল বিপর্যয় কাটাতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কলকাতাতে ড্যাশ-৮ এর মতো ছোট এয়ারক্রাফটের বদলে বড় এয়ারক্রাফট দেওয়া যাবে। সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে বড় বোয়িং ৭৭৭, ৭৩৭ ও ৭৮৭ উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। এসব রুটে বড় এয়ার ক্রাফট ব্যবহার হলে শিডিউল জটিলতা কিছুটা কমবে। এছাড়া নতুন একটি এয়ার ক্রাফট যোগ হওয়ার কথা রয়েছে চলতি সপ্তাহেই। সেটি এলে উড়োজাহাজ সংকট মোকাবিলায় সুবিধা হবে।
সারাবাংলা/জেএ/এটি
আরও পড়ুন
ইয়াংগুনে পাইলট-ক্রুদের ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছে বিমানের বিশেষ ফ্লাইট
ইয়াংগুনে বিমান দুর্ঘটনা: তদন্তে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশও
ইয়াংগুনে বিমান দুর্ঘটনা: ১৫ কার্যদিবসে দিতে হবে তদন্ত প্রতিবেদন
আহত যাত্রীদের চিকিৎসার খরচ দেবে বিমান
ইয়াংগুনে বিমান দুর্ঘটনা তদন্তে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন
ফিরেছে বিশেষ ফ্লাইট, আসেনি দুর্ঘটনাকবলিত যাত্রীরা
ভারী বর্ষণ ও বৈরী আবহাওয়ার কারণেই বিমান দুর্ঘটনা: মিয়ানমার