আদালত স্থানান্তর : খালেদার রিট শুনানি হবে নিয়মিত বেঞ্চে
১১ জুন ২০১৯ ১৫:৫২
ঢাকা: নাইকো দুর্নীতি মামলার বিচারের জন্য কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত স্থানান্তরের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা রিটের শুনানি হবে নিয়মিত বেঞ্চে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন। অবকাশকালীন ছুটির পর আগামী ১৬ জুন থেকে হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চ বসবে।
আরও পড়ুন: আদালত স্থানান্তরে প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার চেয়ে রিটের শুনানি ১০ জুন
আদালতে অবকাশকালীন বেঞ্চে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তাদের সঙ্গে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, নওশাদ জমির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশিদ আলম খান।
পরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ একটা উপজেলা। এটা মেট্রোপলিটন এরিয়ার বাইরে। আদালত স্থানান্তরের আদেশ ন্যায়সঙ্গত নয় এবং সংবিধান পরিপন্থী বলেই আমরা মনে করি। এ জন্য আমরা রিট ফাইল করেছিলাম এবং এর গুরুত্ব অপরিসীম। এটা শুধু বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপার নয়; আইনের ব্যাখ্যার বিষয় রয়েছে যে, মেট্রোপলিটন এরিয়ার মামলার বিচার এলাকার বাইরে হতে পারে কি না?’
আরও পড়ুন: কেরানীগঞ্জে আদালত স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপন বাতিলে আইনি নোটিশ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘শুধু বেগম খালেদা জিয়া বলে না, আদালত স্থানান্তরের ব্যাপারে সরকারের ক্ষমতা কতটুকু আছে, এটা কোনো রাষ্ট্রদ্রোহিতা বা হাই সিকিউরিটির মামলা নয় যে, এর জন্য আদালত স্থানান্তর করতে হবে।’
নিয়মিত মামলা শুনানির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আদালত একটা আদেশ দিয়েছন। কাগজপত্রগুলো আমাদের দেওয়া দরকার এবং যেহেতু এতে আইনের কিছু বিষয় আছে। তাই এ নিয়ে বিশদ আলোচনা প্রয়োজন। আজ ভেকেশন বেঞ্চের শেষদিন। তাই কোর্টও এটিকে নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য বলেছেন।’
অবকাশকালীন বেঞ্চে শুনানির জন্য আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী শুনানি চলাকালে বলতে পারছিলেন না, তিনি কি রুল শুনানি করেছেন, না সময় চাইছেন। তিনি বলেন, ‘আমার আরও বক্তব্য আছে।’
এ সময় কোর্ট বলেন, ‘তাহলে আপনারা ভেকেশন বেঞ্চে আসলেন কেন, আপনাদের আসা উচিত ছিল না।’
তখন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এ কেসটা আরেক কোর্টে যাক। সেখানে আমরা শুনানি করব।’
আরও পড়ুন: ‘খালেদার সুবিধার্থেই কারাগারে কোর্ট স্থানান্তর করা হয়েছে’
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা দাবি করছেন এটি মেট্রোসেশন কেসন। আসলে এটি মেট্রোসেশন কেস না। এটি ছিলর স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের কেস। সেই অবস্থায় এটি স্থানান্তর হয়েছিল ২০০৮ সালের ২০ মে। এ পর্যন্ত সময়ের পর সময় নিয়েছেন। বিভিন্ন উছিলায় তারা কোর্টে আসছেন সময় নিচ্ছেন। আজকেও তারা সময় নিয়েছেন। আমার মনে হয় এটি তারা সময়ক্ষেপণ করার জন্যই করছেন।’
এটাকে তারা সাবজুডিস (বিচারাধীন) বলে উল্লেখ করেছেন এ অবস্থায় মামলা চলবে কিনা জানতে চাইলে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা বলেন, ‘আজকে রুল হয়নি সুতরাং বিচারিক আদালতে বাধা থাকার প্রশ্নই আসে না।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার বিচারের জন্য বিশেষ আদালত পুরান ঢাকার কারাগার থেকে সরিয়ে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার সরকারি আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হয়।
আদালত স্থানান্তরে জারি করা সরকারের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবীরা গত ২৬ মে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি আবেদনটি করেন।
সারাবাংলা/ এজেডকে/একে