মোবাইল চুরি অভিযোগে হত্যা: ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
১ আগস্ট ২০১৯ ১২:৫৮
ঢাকা: পুরান ঢাকার নবাবপুরে মোবাইল চুরির অভিযোগে রজব নামে এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় আরও সাত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৪ ও ঢাকার বিশেষ দায়রা আদালতের বিচারক আবদুর রহমান সরদার এ আদেশ দেন।
যে তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তারা হলেন— রহিম ওরফে আরিফ, জিকু ও আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে টাইগার। তাদের তিন জনই পলাতক রয়েছেন।
অন্যদিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি পাওয়া সাত জন হলেন— মন্টি, মো. মিলন ওরফে চোপা মিলন, আকাশ ওরফে রাসেল, ফরহাদ হোসেন ওরফে ফরহাদ, সজিব আহমেদ খান, শহীন চাঁন খাদেম ও মোহাম্মদ আলী হাওলাদার বাবু। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী হাওলাদার বাবু ছাড়া বাকি সবাই পলাতক। তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিন আসামি রাজ কুমার, রুবেল ও শুককুর আলী মিয়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
.মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় ২০১১ সালের ২৪ জুলাই রাত ৯টার সময় বাদী মো. জুম্মন তার ভাবির মধ্যেমে জানতে পারেন, কে বা কারা তার ছোট ভাই রজবকে ছুরিকাঘাত করে মেরে ফেলেছে। খবর পেয়ে জুম্মন তার ভাগ্নে জীবনকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছে তার ভাইয়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান।
তারা উপস্থিত লোকজনের কাছে জানতে পারেন, রুবেল ও রজব মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড করার জন্য নবাবপুর রোডে আসামাত্রই আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আসামি রুবেল, বাবু, সিদ্দিক ওরফে টাইগার, মন্টি, ঝিকু, চঞ্চল, শুককুর, সাইদুল, রাজকুমার, আমিনসহ আরও ৪/৫ জন বাদীর ভাইকে ১৬/এ কোর্ট হাউজ স্ট্রিটের পূর্ব দিকে নিয়ে গিয়ে বুকে ও পেটে তিনটি ছুরিকাঘাত করে। সেই সময় রজব চিৎকারে করলে আশপাশে লোকজন জড়ো হয়, আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
রজবকে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপালতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, একই বছরের ২৩ জুলাই রাত ১১টার সময় আসামিরা রজবকে একটি মোবাইল চুরি বিতর্কিত ঘটনায় ধরে আনতে জুম্মনের কাছে যায়। ওই সময় জুম্মন আসামিদের বুঝিয়ে তার ভাইকে বাসায় নিয়ে আসে। এ ঘটনার জের ধরে আসামিরা রজবকে হত্যা করে বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে।
এ ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত রজবের ভাই জুম্মন। ২০১২ সালের ৫ ডিসেম্বর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বি এম নাজমুল হুদা ১৩ জনকে আসামি করে মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। তাদের মধ্যে তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড, সাত জনকে যাবজ্জীবন ও বাকি তিন জনকে খালাস দিলেন আদালত।