Tuesday 08 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়েছেন ব্যবসায়ীরা


৯ আগস্ট ২০১৯ ১৬:৩০ | আপডেট: ৯ আগস্ট ২০১৯ ১৭:৫৯
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: গত বছরের তুলনায় অন্তত ২৫ লাখ পিস চামড়া কম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা। যদিও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা গত বছরের চেয়ে বেশি। গত বছরের চেয়ে বেশি কোরবানি হবে বলেও ধারণা করছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। কোরবানির পশুর সংখ্যা বাড়লেও কেন চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে, সে সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি সংগঠনের নেতারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের এমন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের ফলে চামড়ার দাম নিয়ে এখনই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও বরাবরের মতোই সরকার এ বছরও কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এ বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ১ কোটি ১৮ লাখ। এর মধ্যে অন্তত ১ কোটি ১০ লাখ পশু কোরবানি হতে পারে বলে ধারণা করছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। অন্যদিকে, গত বছর ঈদে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৫ লাখ। এর মধ্যে ১ কোটি ৫ লাখের মতো পশু কোরবানি হয়েছিল।

এ বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা বাড়লেও কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা এক কোটি পিস পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন। গত বছর এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল সোয়া এক কোটি পিস। অর্থাৎ, আগের বছরের তুলনায় অন্তত ২৫ লাখ পিস চামড়া কম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন তারা।

কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. হাজী দেলোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, এ বছর আমরা এক কোটি পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছি। গত বছরের চেয়ে এবার আমাদের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কম।

তবে কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা লক্ষ্যমাত্রা কমালেও তাতে বাজারে প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মফিজুল ইসলাম। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশে চামড়ার বাজার উন্মুক্ত। যে কেউ চাইলে এখান থেকে চামড়া কিনতে পারবেন। ব্যবসায়ীরা লক্ষ্যমাত্রা কম নির্ধারণ করলেও বাজারে এর প্রভাব তেমন পড়বে না।’

‘আমরা চামড়া ব্যবসায়ীদের বলেছি, এই টাকাটা যেহেতু গরীবের কাছে যায়, তারা যেন ন্যায্যমূল্য দেয়। আর এই টাকার পুরাটাই তো উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়।’ কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য যাই হোক, বাজারে কোনো অবিক্রিত চামড়া থাকবে না’— বলেন বাণিজ্য সচিব। কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের সংগঠনও অবশ্য বলছে, বাজারে কোনো চামড়াই অবিক্রিত থাকে না।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনে তথ্য অনুযায়ী, দেশে সারাবছর ৬০ থেকে ৭০ লাখ গরু জবাই হয়। ছাগল ও ভেড়া জবাই হয় ৮০ থেকে ২ কোটি। অন্যদিকে, ঈদুল আজহায় গরু-মহিষ জবাই হয় প্রায় ৩০ লাখ, ছাগল ও ভেড়া ৭০ থেকে ৮০ লাখ। কোনো না কোনো প্রক্রিয়ায় এসব পশুর সবগুলোর চামড়াই তারা সংগ্রহ করে থাকেন।

কোরবানির চামড়া, চামড়া ব্যবসায়ী, মৌসুমি ব্যবসায়ী, চামড়া শিল্প

সংগঠনটি আরও জানায়, দেশে প্রতিবছরই কোরবানি করা পশুর সংখ্যা বাড়ে। একইসঙ্গে চামড়া সংগ্রহও বাড়ে ৫ থেকে ৭ শতাংশ। তা সত্ত্বেও এ বছর কেন লক্ষ্যমাত্রা কম ধরা হয়েছে, তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি সংগঠনের সভাপতি মো. হাজী দেলোয়ার হোসেন।

এদিকে, ট্যানারি মালিকেরা বলছেন, তারা গত বছর ৯৫ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন। এ বছর বন্যার কারণে এই সংখ্যা পাঁচ থেকে সাত লাখ কম হতে পারে।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, মূলত বন্যার কারণেই চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা কম ধরা হয়েছে। আমরা মনে করছি, এবার কোরবানি কম হবে। এছাড়া আমাদের হাতে তেমন টাকা নেই। আন্তর্জাতিক বাজারেও চামড়ার দাম কমেছে। আমরা চামড়ার দাম কমাতে বলেছিলাম। গত বছরের মতো দাম অপরিবর্তিত রাখার প্রভাব বাজারে পড়বেই।

এদিকে, এ বছর চামড়ার দাম গতবছরের মতোই অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তবে গত সাত বছরের চামড়ার দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। গেল কোরবানি ঈদে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন সব পক্ষ।

আরও পড়ুন
গরুর চামড়ার দাম ৭ বছরে অর্ধেক, খাসির এক-তৃতীয়াংশ
কোরবানির গরুর চামড়ার দাম বদলায়নি, প্রতি বর্গফুট ৩৫-৪৫ টাকা
দু’মাসে রফতানি আয় ৬৭৯ কোটি ডলার, চামড়া রফতানি কমেছে ২৬ শতাংশ
চামড়া কেনায় আগ্রহ কম সাভারের ট্যানারিগুলোর

 

কোরবানি চামড়া পশুর চামড়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর