আওয়ামী লীগ সভাপতি হার্ডলাইনে, যুবলীগে নানামুখী তৎপরতা
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২০:১৮
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ক্ষোভের কথা জেনে সংগঠনের অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী যুবলীগ। কেন্দ্রের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের ইউনিট পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের কাছে দায়িত্বশীল আচরণ আশা করেছেন। রাজনীতির নামে কোনোরকম বিশৃঙ্খলা, চাঁদাবাজি, পেশি শক্তির প্রয়োগের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন শেখ হাসিনা। ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের পর এবার সহযোগী সংগঠন যুবলীগের প্রতিও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেন, তারা সাবধান হয়ে যান, এসব বন্ধ করুন। তা না হলে যেভাবে জঙ্গি দমন করা হয়েছে, একইভাবে তাদেরকেও দমন করা হবে।
গত ৭ সেপ্টেম্বরের সভায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘যুবলীগের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা (মহানগর যুবলীগের সভাপতি) যা ইচ্ছে করে বেড়াচ্ছে, চাঁদাবাজি করছে। আরেকজন (মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া) এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলেন।’
তারপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি ও স্বরাষ্ট্র সচিবের বরাত দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরেকটি ফাইল খোলেন দলের শীর্ষ নেতাদের সামনে। আওয়ামী লীগ সভাপতি এ সময় যুবলীগের নামে আসা অভিযোগের কিছু কিছু পড়ে শোনান তার সহকর্মীদের। ঢাকা শহরের সেগুনবাগিচা এলাকায় মহানগর যুবলীগের নেতারা জুয়া খেলার ক্যাসিনো চালান বলে জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ওইসব ক্যাসিনো পরিচালনার জন্য নেপাল ও থাইল্যান্ড থেকে প্রশিক্ষিত নারী কর্মীদের নিয়ে আসা হয় বলেও তার কাছে খবর আছে। মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকের পরের শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকেও যুবলীগের বিষয়ে কড়া বার্তা দেন শেখ হাসিনা।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের একটি সাংগঠনিক ট্রাইব্যুনাল আছে। ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দুই নেতাকে শোকজ করা হয়েছে। আগামী শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) তাদের ট্রাইব্যুনালে ডাকা হবে। এখানে কেউ কোনো অপরাধে জড়িত থাকলে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট সারাবাংলাকে বলেন, যুবলীগ হচ্ছে আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড। আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কতিপয় ব্যক্তি (জামায়াত-শিবির) দলকে দুর্বল করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। এরই অংশ হিসেবে এবার সবচেয়ে শক্তিশালী ও সুসংগঠিত সংগঠন আওয়ামী যুবলীগকে দুর্বল করতে উঠে-পড়ে লেগেছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র বাংলার মাটিতে সফল হবে না।’
জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সর্বদায় যুবলীগ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে, যোগ করেন ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। তিনি আরও বলেন, গত শনিবারের অভিযোগের বিষয়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি হিসেবে আমরা এ তদন্ত কমিটিকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।
এদিকে অভিযোগ উঠা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার শক্তিশালী সংগঠন বলতে আছে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণ। তার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। এ সংগঠনের সকল দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন যুবলীগের ডাইনামিক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী। দুঃসময়ে ছাত্ররাজনীতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে যুবলীগ করছি। এত শক্তিশালী সংগঠন রাজধানী ঢাকায় গত ২৫ বছরে দেখিনি। কিন্তু এই সংগঠনকে ধ্বংস করার জন্য যত ষড়যন্ত্র, গভীর ষড়যন্ত্র। মূলত প্রিয়নেত্রীর হাতকে দুর্বল করার জন্যই এই ষড়যন্ত্র।’
সারাবাংলা/এমএমএইচ/একে