দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশি অপহরণ, কাউন্টার টেররিজমের তথ্যে উদ্ধার
১৬ নভেম্বর ২০১৯ ১৭:৪০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশি যুবককে অপহরণের ১৪ দিন পর উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণে জড়িত এক পাকিস্তানি ও এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে দেশটির ন্যাশনাল কিডন্যাপিং টাস্ক টিম।
অপহরণ হওয়া যুবকের পরিবার তাকে উদ্ধারে সহযোগিতা চেয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের শরণাপন্ন হয়েছিল। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট অপহরণে জড়িতদের বিষয়ে এবং যুবককে জিম্মি করে রাখায় সম্ভাব্য স্থান শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় তথ্য দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল কিডন্যাপিং টাস্ক টিমকে। এই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে।
সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় অপহরণের পর যুবকের পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। টাকা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশি একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া হয়। অভিযোগ পাবার পর আমরা ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সূত্রে তদন্ত শুরু করি এবং পর্যাপ্ত তথ্য সাউথ আফ্রিকার ন্যাশনাল কিডন্যাপিং টাস্ক টিমকে দিই। তখন তারা অপহৃতকে উদ্ধার করে এবং দু’জনকে গ্রেফতার করে। এই অপহরণের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নাগরিক জড়িত বলে তারা জানিয়েছেন।’
অপহরণের শিকার আব্দুল্লাহ আল রেজা (২৪) চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহরের আলী মাঝির পাড়ার নাছির উদ্দিনের ছেলে।
সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক আফতাব হোসেন সারাবাংলাকে জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার এপুমালাঙ্গা টুইফনটেন শহরে খালাতো ভাই ফরহাদের দোকানে কর্মচারী হিসেবে আছেন রেজা। গত ৩১ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে চার জন কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসী দোকানে গিয়ে রেজাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মোবাইল ও নগদ টাকাসহ নিয়ে যায়। এরপর তারা ফরহাদকে বাংলাদেশের একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে সেখানে ৫০ লাখ টাকা জমা দিতে বলে। রেজার বাবা নাছির উদ্দিন ও ফরহাদের ভাই সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনারের কাছে এসে এ বিষয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।
পুলিশ পরিদর্শক আফতাব হোসেন বলেন, ‘তদন্তে নেমে আমরা ব্যাংক অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তিনি আমাদের জানান, দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসরত তার ছোট বোনের স্বামী আমিনুল হক তাকে বলেছেন- তার অ্যাকাউন্ট নম্বরটি তিনি একজনকে দিয়েছেন এবং সেখানে ১ লাখ টাকা জমা হবে। কিন্তু অপহরণের বিষয়টি তাকে জানাননি আমিনুল। আমরা দক্ষিণ আফ্রিকায় আমিনুলের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করি। আরও বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আমরা কয়েক দফা হোয়াটস অ্যাপ, মেইল এবং ভিডিও কনফারেন্সে দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল কিডন্যাপিং টাস্ক টিম ও ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স হেড অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি।’
গত ১১ নভেম্বর প্রথমে অপহরণে জড়িত পাকিস্তানি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়। তার তথ্যমতে ১৩ নভেম্বর টুইফনটেন শহরে একটি বাসায় জিম্মি অবস্থা থেকে রেজাকে উদ্ধার করা হয়। এরপর ১৪ নভেম্বর আমিনুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে আফতাব হোসেন জানিয়েছেন।