Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘শতভাগ তথ্য সংগ্রহ না হওয়ায় যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক পিছিয়েছে’


১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৮:৩৫

ঢাকা: শতভাগ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ হয়নি বলে পূর্ব নির্ধারিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের সচিব পর্যায়ের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এর আগের বৈঠকটি আট বছরের বিরতিতে গত ৮ আগস্ট ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘অনেকগুলো তথ্য এখনো সংগ্রহ করা যায়নি বলে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের সচিব পর্যায়ের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা যখন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে পুরোপুরি প্রস্তুত হব, তখন আবার এই বৈঠক হবে। কেননা তথ্য ঠিকমতো না হলে বৈঠকের আলোচনা ফলপ্রসূ হবে না।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ভারতের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ‘বিতর্কিত’ এনআরসি (ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি) বিল পাসকে কেন্দ্র করে দেশটির আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একাধিক রাজ্যে বিক্ষোভ ও অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গত ১৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) তার পূর্বনির্ধারিত নয়া দিল্লি সফর বাতিল করেন। এর আগের দিন, একই কারণে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও তাদের পূর্বনির্ধারিত ভারত সফর বাতিল করেন।

যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক নিয়ে আগের খবর: ৭ নদী নিয়ে যৌথভাবে কাজ করবে ঢাকা-নয়াদিল্লি

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এনআরসিকে কেন্দ্র করে নয়া দিল্লি অশান্ত হয়ে ওঠায় দুই মন্ত্রীর সফর বাতিলের পর যৌথ নদী কমিশনের সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য ঢাকার উচ্চ পর্যায় থেকে  অনুমতি মেলেনি। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর পর্যন্ত পানি নিয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠানের অনুমতির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে শেষ পর্যন্ত সবুজ সংকেত মেলেনি।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু পর্যালোচনা করে দেখলাম, প্রাপ্ত তথ্যের কোথাও কোথাও দুর্বলতা রয়েছে। তাই আগে শতভাগ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই বৈঠক পেছানোর সঙ্গে এনআরসি’র কোনো সম্পর্ক নেই।’

এর আগে, গত ৮ আগস্ট ঢাকায় অনুষ্ঠিত যৌথ নদী কমিশনের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের মধ্য দিয়ে বহমান অভিন্ন ৫৪টি নদীর মধ্যে মনু, মুহুরী, খোয়াই, ফেনী, গোমতী, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা— এই সাতটি নদীর পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে যৌথভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয় উভয় পক্ষ। এছাড়া পদ্মা নদীতে ব্যারেজ নির্মাণে একটি যৌথ কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়।

যৌথ নদী কমিশনের সচিব পর্যায়ের সর্বশেষ বৈঠকে ঢাকার পক্ষে ছয়টি প্রস্তাব এবং নয়া দিল্লির পক্ষে চারটি প্রস্তাব ছিল। ঢাকার ছয়টি প্রস্তাব হচ্ছে— গঙ্গা নদীর পানিবণ্টন চুক্তির আওতায় প্রাপ্ত পানির সর্বোত্তম ব্যবহারের লক্ষ্যে যৌথভাবে সমীক্ষা ও বাংলাদেশে গঙ্গা-পদ্মা ব্যারাজ নির্মাণে ভারতীয় কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা; অন্যান্য অভিন্ন নদী যেমন— মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানিবণ্টন চুক্তির ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়ন; আপারা সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পের ইনটেক চ্যানেলের (রহিমপুর খাল) অবশিষ্ট অংশের খনন কাজ বাস্তবায়ন; বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত সহযোগিতা সসম্প্রসারণ; বাংলাদেশের আখাউড়ায় সিঅ্যান্ডবি খাল ও জাজি নদীতে দূষণ; এবং আন্তঃসীমান্ত নদীর অববাহিকাভিত্তিক পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা।

অন্যদিকে, নয়া দিল্লির প্রস্তাবগুলো হচ্ছে— মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা বা জলঢাকা এবং দুধকুমার বা তরসা ছয়টি আন্তঃসীমান্ত নদীর পানিবণ্টন; পশ্চিম বাংলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই, পুনর্ভবা ও টাংগন নদীতে শুষ্ক মৌসুমে প্রবাহ কমে যাওয়া; বাংলাদেশের চিনিকল থেকে নির্গত তরল বর্জ্য দ্বারা পশ্চিম বাংলার মাথাভাঙ্গা-চূর্ণী নদী দূষণ; এবং ফেনী নদী থেকে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি উত্তোলনের মাধ্যমে ত্রিপুরার সাবরুম শহরে ‘ড্রিংকিং ওয়াটার সাপ্লাই স্কি’ বাস্তবায়ন।

ফাইল ছবি

ড. এ কে আবদুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন পূর্বনির্ধারিত বৈঠক যৌথ নদী কমিশন যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর