Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন, প্রস্তুত তেজগাঁও বিমানবন্দর


১০ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:২৫

ঢাকা: দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিমানে এসে পুরাতন এই বিমানবন্দরেই নেমেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ তার জন্মের শত বছর পর নিজের স্বাধীন করা দেশেই আবারো তিনি একইভাবে নামবেন। তবে তা হবে প্রতীকি। এর মাধ্যমে শুরু হবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কাউন্টডাউন।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ৪টা ৩৫মিনিটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী বিমান (সি-১৩০জে) অবতরণ করবে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে। বঙ্গবন্ধুর প্রতীকি এই অবতরণকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে রাজধানীর এই পুরাতন বিমানবন্দরটিকে সাজানো হয়েছে।

বিমান থেকে বঙ্গবন্ধুর নামার দৃশ্যটি দেখতে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য বিমানবন্দর চত্বরের একপাশে বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এরইমধ্যে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ কাউন্টডাউনস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। একদিকে সাধারণ গ্যালারীতে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা আছেন। অন্যদিকে বিশিষ্টজনদের জন্য আলাদা গ্যালারীতে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা, উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়েছেন।

জাতির পিতার শারীরিক উপস্থিতি না থাকলেও লেজার লাইটের মাধ্যমে তার অবয়ব বিমানের দরজায় ফুটিয়ে তোলা হবে। বঙ্গবন্ধুর অবয়বের আলোটি ধীরে ধীরে সিঁড়ি দিয়ে নেমে লাল গালিচার মাথায় এসে থেমে যাবে। আর এই আলোকে স্বাগত জানাবে নব প্রজন্মের ১৫০ শিক্ষার্থীর প্রতিনিধি দল।

 

আর এভাবেই শুরু হবে মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন শুরুর আনুষ্ঠানিকতা।


আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ২০২০-২১ সালকে মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছে সরকার। ১৭ মার্চ বর্ণাঢ্য উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বছরব্যাপী উদযাপন। মুজিববর্ষ উদযাপন মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার অনুষ্ঠেয় ক্ষণগণনা কর্মসূচি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- শুক্রবার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে ক্ষণগণনা উদ্বোধন ও মুজিববর্ষের লোগো উন্মোচন। বিকেল ৩টায় শুরু হবে অতিথিদের আগমন। সাড়ে চারটায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুষ্ঠানস্থলে আসবেন। এরপর ৪টা ৩৫মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী বিমান (সি-১৩০জে) অবতরণ করবে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে। ৪টা ৪৫মিনিটে বিমানটি ট্যাক্সি করে টারমাক এলাকায় পৌঁছানোর পর দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ২১বার তোপধ্বনি করা হবে। ৪টা ৫০মিনিটে বিমানের দরজা খোলা হলে ১৫০ শিক্ষার্থীর একটি দল স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত থাকবে। লেজার লাইটের মাধ্যমে দরজার কাছে আলোকিত করা হবে এবং আলোটি ধীরে ধীরে সিঁড়ি দিয়ে নেমে লাল গালিচার মাথায় এসে থেমে যাবে।

এ আলোই আমাদের বঙ্গবন্ধু যে আমাদের আলোকবর্তিতা হয়ে এসেছিলেন তারই প্রতিফলন ঘটাবে জাতীয় জীবনে। এরপর ৫টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষের লোগো উন্মোচন ও ক্ষণগণনা উদ্বোধন করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও প্রধান সমন্বয়ক প্রধানমন্ত্রীর হাতে মুজিবর্ষের লোগো তুলে দেবেন। লোগো উন্মোচনের পর প্রধানমন্ত্রী সুইচ টিপে ক্ষণগণনার উদ্বোধন করবেন যা সারাদেশে একযোগে চালু হবে। মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন বা ক্ষণগণনার জন্য সারাদেশে ১২টি সিটি করপোরেশনের ২৮টি পয়েন্টে, বিভাগীয় শহর, ৫৩ জেলা ও দুই উপজেলা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৮৩টি পয়েন্টে কাউন্টডাউন ঘড়ি বসানো হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উদযাপনে দুটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ১০২ সদস্যবিশিষ্ট ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি’। এ কমিটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে সভাপতি ও কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে প্রধান সমন্বয়কারী করে গঠন করা হয়েছে ৬১ সদস্যবিশিষ্ট ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন স্বদেশের বুকে ফিরে আসেন। যেহেতু ১০ জানুয়ারি ঐতিহাসিক দিন, তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কাউন্টডাউন এই ঐতিহাসিক দিনেই শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বিকেলে মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করবেন।’

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে যান বঙ্গবন্ধু। সেখান থেকে ভারতে স্বল্প সময়ের যাত্রাবিরতি দিয়ে ১০ জানুয়ারি দুপুরে তিনি তৎকালীন তেজগাঁও বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। সেই ঐতিহাসিক ঘটনাকে আরো স্মরণীয় করতে ১০ জানুয়ারিই শুরু হবে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা। জন্মশতবার্ষিকীর মূল আয়োজন শুরু হবে ১৭ মার্চ। ১৭ মার্চ অনুষ্ঠানের মূল পর্বে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, বঙ্গবন্ধুর সমসাময়িক সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত থাকবেন।

৩১ অক্টোবর ২০১৯ গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ক্ষণগণনার বিষয়ে উপস্থাপন করা হয় এবং সিদ্ধান্ত হয় যে, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে লক্ষ্য রেখে ঢাকাসহ সকল সিটি করপোরেশন এবং প্রতিটি জেলা শহরে একযোগে ক্ষণগণনা শুরু করা হবে। এ বিষয়ে পরবর্তী সময় বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয়। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত সভায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসকে উপলক্ষ করে ১০ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে একযোগে ক্ষণগণনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জানান।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর