‘মুজিবর্ষের অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস, এড়ানো হবে জনসমাগম’
৮ মার্চ ২০২০ ২২:৩০
ঢাকা: বিশ্ব পরিস্থিতি এবং জনস্বার্থ বিবেচনায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজন মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান কিছুটা পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে। ব্যাপক জনসমাগম এড়িয়ে চলবে এই উদযাপন।
রোববার (৮ মার্চ) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক জরুরি ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব ও জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
আরও পড়ুন- ইতালি থেকে দেশে আসা ২ জন, দেশে আরও একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন কমিটি এবং জাতীয় কমিটির এক যৌথ সভা রোববার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন।
কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, যৌথ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১৭ মার্চ মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে দেশে করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। কারণ বঙ্গবন্ধু জনগণের কষ্ট লাঘব করতে চেয়েছেন। তাই জনকল্যাণ ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় রেখে সামগ্রিক প্রোগ্রামটি পুনর্বিন্যাস করা হয়।
আরও পড়ুন- ‘করোনা প্রতিরোধে জরুরি কাশি শিষ্টাচার ও হাত ধোয়ার চর্চা’
তিনি আরও বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপাতত মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান ঘিরে জনসমাগম পরিহার করা হবে। তবে ১৭ মার্চ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলবে। এর আওতায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা এবং পরবর্তী সময়ে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হবে। সারাদেশে দোয়া মাহফিল চলবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সীমিত আকারে অনুষ্ঠান চলবে। প্রকাশনা, স্মারক ডাকটিকিট ও স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করা হবে।
কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে জনসমাগম এড়ানোর কথা বলা হয়েছে। তাই ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে মুজিববর্ষের যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। সেটি কোথায়, কখন হবে, তা আমরা পরবর্তী সময়ে জানিয়ে দেবো। ওই অনুষ্ঠানে আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বন্ধুরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের যেসব অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা ছিল, তাদের নিয়েই পরে ওই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
আরও পড়ুন- করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে যা কিছু করণীয়
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পুনর্বিন্যস্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি আসবেন কি না— সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির এই প্রধান সমন্বয়ক বলেন, এটি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে আমরা পরবর্তী সময়ে বড় পরিসরে অনুষ্ঠানটি করব। আমাদের আমন্ত্রিত অতিথিরা পরবর্তী ওই সময় আসবেন।
আগামীকাল সোমবার (৯ মার্চ) মুজিববর্ষ উদযাপন বিষয়ক জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠক আছে জানিয়ে কমিটির প্রধান সমন্বয়ন ড. কামাল নাসের বলেন, আজকের (রোববার) যৌথ সভায় কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামীকাল বিকেল ৪টায় জাতীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে আমরা বিস্তারিত ওয়ার্ক আউট করব। পুনর্বিন্যস্ত অনুষ্ঠানগুলো কিভাবে বাস্তবায়ন হবে, সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আগামীকালের বেঠকে।
আরও পড়ুন- করোনাভাইরাস সম্পর্কে যা কিছু জানা প্রয়োজন
এর আগে, গত বছরের ১৫ নভেম্বর ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু ভারতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীকে উদ্ধৃত করে জানায়, মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরে গত ৭ জানুয়ারি জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার উপস্থিতি নিশ্চিত করেন।
ওই দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যেসব বিশ্বনেতা উপস্থিত থাকবেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, আরব আমিরাতের যুবরাজ শেখ মুহাম্মদ বিন যায়েদ আল-নাহিয়ান, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, ওআইসি সেক্রেটারি জেনারেল, ভুটানের রাজা জিগমে ওয়াংচুক ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মুহাম্মদ।
অনুষ্ঠান পুনর্বিন্যাস জনসমাগম এড়ানো পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন মুজিববর্ষ