‘ঈদের আগেই প্রবাসী ও কর্মহীন শ্রমিকদের প্রণোদনা দিন’
১৩ মে ২০২০ ১৬:৩৭
ঢাকা: প্রবাসী ও কর্মহীন শ্রমিকদের জন্য প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করেছে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন। পাশাপাশি সাংবাদিকদের জন্যও প্রণোদনা চেয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার (১৩ মে) দুপুরে পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মানবিক কারণে ও দুর্দশা লাগবে করোনা পরিস্থিতিতে সকল শ্রেণির শ্রমিকদের ২৫ রমজানের মধ্যে ১৫ হাজার টাকা করে এককালীন সহযোগিতা করুন। করোনাযোদ্ধা গণমাধ্যমকর্মী, অসহায় হয়ে পড়া প্রবাসীদের পরিবার ও কর্মহীন শ্রমিকদের নগদ সহযোগিতা দিন। বিদেশে বেকার হয়ে যাওয়া শ্রমিকদের সরকারি খরচে দেশে আনার উদ্যোগ নিন।’
করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন শ্রমিকদের সংকট উত্তরণে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে— গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য উল্লেখযোগ্য প্রণোদনা ঘোষণা করে ঈদের আগেই তা পরিশোধ করা; প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে যাদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে, তাদেরকে দ্রুত নগদ প্রণোদনার আওতায় আনা; আটকে পড়া শ্রমিকদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় দেশে আসতে চান, তাদের সরকারি খরচে ফিরিয়ে আনা।
এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সড়ক পরিবহন, নৌপরিবহন, হোটেল-রেস্তোরাঁ, নির্মাণ শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ হকার, ফুটপাতের হকার, বন্ধ কলকারখানার শ্রমিক, দোকান শ্রমিক, দিনমজুর, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী, সেলুন শ্রমিক, লন্ড্রি শ্রমিক, ঘাটমাঝি, কুলি মজুর, কোয়ারি শ্রমিক, আইনজীবির সহকারী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ সহযোগিতা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং মানবিক কারণে ২৫ রমজানের মধ্যে সকল শ্রেণির কর্মহীন শ্রমিকদের ১৫ হাজার টাকা করে সাহায্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
এ কাজে ধন্যাঢ্য ব্যক্তি, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের জাকাতসহ ১০ শতাংশ সম্পদ দান করার অনুরোধ জানান ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন।
তিনি বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও যেন কমপক্ষে এক মাসের বেতনের সমপরিমাণ টাকা কর্মহীন শ্রমিকদের সাহায্যার্থে দান করেন। এছাড়া দুর্নীতিবাজদের কালো টাকা, বিদেশে পাচার করা টাকা এবং ঋণখেলাপিদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে কর্মহীন শ্রমিকদের সাহায্যার্থে ব্যয় করতে হবে।’
ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের অন্য সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে— সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রেশন কার্ডের তালিকা প্রণয়ন করা; প্রকৃত অভাবগ্রস্তদের তথ্য জানতে সাড়ে চার লাখ মসজিদের ইমাম ও প্রাথমিক শিক্ষকদের থেকে তথ্য সংগ্রহ করা; করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট জাতীয় মহাসংকট উত্তরণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সেবাসংস্থা, শ্রমিক সংগঠনসহ ধনাঢ্য ব্যক্তি, শিল্পমালিক ও ধর্মীয় নেতাদের সমন্বয়ে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়া।
মানুষের জীবন বিপন্ন করে এমন ধরনের কার্যক্রম যেমন— ভেজাল খাবার, এডিস মশার উপদ্রপ, দুর্নীতি, সন্ত্রাসসহ সব ধরনের পাপাচার ও অশ্লীলতা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, শ্রমিকদের জীবন নিরাপদ রাখা, ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপন, উৎপাদন বৃদ্ধি, শ্রমিক ও মালিকের স্বার্থ সংরক্ষণের লক্ষ্যে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করার সুপারিশও রয়েছে তাদের।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুর রহমান, সহসভাপতি মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ, সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল হাফেজ মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম।
অনলাইনে যুক্ত ছিলেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল শহিদুল ইসলাম কবির, অ্যাডভোকেট এ বি এম শেহাবুদ্দিন শেহাব, সৈয়দ ওমর ফারুক, আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম, ইমাম হোসেন ভুইয়া ও ইউসুফ আলী।
ইসলামী আন্দোলন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন কর্মহীনদের প্রণোদনা প্রবাসীদের জন্য প্রণোদনা শ্রমিকদের প্রণোদনা সাংবাদিকদের প্রণোদনা