করোনাকালে ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে’ সক্রিয় হবে আ. লীগ
২ জুন ২০২০ ১০:৩৫
ঢাকা: করোনাভাইরাস সংকটে ঝিমিয়ে পড়েছে রাজনৈতিক কর্মসূচি। চলমান করোনা সংকট সহসাই সমাধান হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছেন না রাজনৈতিক নেতারা। যে কারণে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে’ সক্রিয় হওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের নেতারা সারাবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দলীয় নেতারা জানান, ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে’ কিভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন ও জনগণের কাছাকাছি যাওয়া যায়, সে বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে আমরা সামনের দিনে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। চলতি মাস থেকে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে’ কর্মসূচি পালনের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। যে প্রক্রিয়ায় ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস সংকটের শুরু থেকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে জেলা পর্যায়ে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, দলীয় নেতা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করে মতবিনিময় করেছেন সেভাবেই বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে দলীয় কার্যালয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। তাই সামনের দিনগুলোতে দলীয় সভাপতির একান্ত নির্দেশনায় দলের পক্ষ থেকে আমরাও সারাদেশে দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় ও নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়ার কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে যাচ্ছি। চলতি মাসে বাজেট অধিবেশনের পর কয়েক মাস থেকে অনুষ্ঠিত না হওয়া কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকও ভিডিও কনফারেন্স করার চিন্তাভাবনাও আছে।’ এ লক্ষে ইতোমধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে অনভ্যস্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের জুম লিংকও পাঠানো হয়েছে বলেও জানান দফতর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল নেতারা।
অপরদিকে, চলতি মাসে ৭ জুন ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস এবং ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কিভাবে পালন করা যায় সে সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে দলীয় কর্মসূচি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সামনের দিনগুলোতে আরও কিভাবে সক্রিয় করা যায় সে ব্যাপারে আমরা চিন্তাভাবনা করছি। এ ব্যাপারে আমাদের দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা আগামী ৭ জুনের ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস এবং ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তবে এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।’
এছাড়া ২৩ জুন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি টিম যেতে পারেন কিনা সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, যা পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক ৭ জুন ও আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নিয়ে আলোচনা করেছেন নেতারা। এসময় উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে আলাপ-আলোচনা করেন।
এসময় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য সাহাবুদ্দীন ফরাজীসহ অন্যরা।
আলোচনায় জনসমাগম না হয় এমন রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ থাকায় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস বিনির্মাণে ঐতিহাসিক ৭ জুন এবং ২৩ জুনের গুরুত্ব-তাৎপর্য তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তা উঠে আসে। নেতারা বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে করোনাভাইরাসে সৃষ্ট মারাত্মক সংকট উত্তরণ এবং করোনা পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সমুন্নত রাখতে দলের করণীয় ও কর্মকৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।