করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট: গ্রেফতার ৫
২৩ জুন ২০২০ ২৩:৫১
ঢাকা: করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া ফল জানিয়ে দেওয়ার অভিযোগে ‘বুকিং বিডি’ ও ‘হেলথ কেয়ার’ নামের দুই প্রতিষ্ঠানের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চক্রটি একেকজনের কাছ থেকে করোনা পরীক্ষার রিপোর্টের নাম করে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিত বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (২৩ জুন) রাজধানীর বিমানবন্দর আশকোনা বাড়ি ও গুলশান-২-এর কনফিডেন্স টাওয়ারে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতার পাঁচ জনের মধ্যে রয়েছেন হুমায়ন কবীর (৩৪), তানজিনা ও আরিফুল চৌধুরী।
পুলিশের ভাষ্য, এরা করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ফল জানিয়ে দেয়। তবে নমুনা সংগ্রহ করার পর তা আর পরীক্ষা করা হয় না। তাদের নেই কোনো ল্যাব। কম্পিউটারে ফল লিখে ইমেইলে তা রোগীর কাছে পাঠিয়ে দেয়। এভাবেই এরই মধ্যে ৩৭ জনের ভুয়া কোভিড-১৯ টেস্ট রিপোর্ট জানিয়ে দিয়েছে তারা। নমুনা সংগ্রহের সময় রোগীর বাহ্যিক উপসর্গ দেখে একটা ধারণা থেকে ফলাফল তৈরি করে। করোনার বাহ্যিক উপসর্গ দেখা দিলে, সেক্ষেত্রে তার পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ উল্লেখ করা হয়। কোনো উপসর্গ না দেখা দিলে তার রিপোর্টে নেগেটিভ উল্লেখ করা হয়।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের সহকারী কমিশনার মাহমুদ খান বলেন, মঙ্গলবার সকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে গুলশানের কনফিডেন্স টাওয়ারের অফিসে অভিযান চালিয়ে কম্পিউটার জব্দ করা হয়। কম্পিউটারে জাল রিপোর্ট পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত তারা ৩৭ জনের করোনা নমুনা সংগ্রহ করে মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছেন। বাসায় গিয়ে স্যাম্পল সংগ্রহ করতে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা তারা নিয়েছেন।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন উর রশিদ বলেন, এই চক্রটি আগে জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা (জেকেজি হেলথকেয়ার) নামের প্রতিষ্ঠানে বুথের মাধ্যমে করোনার উপসর্গ রয়েছে— এমন লোকের নমুনা সংগ্রহের চাকরি করত। এই প্রতিষ্ঠানটি করোনার নমুনা সংগ্রহের জন্য অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান। গত ১২ এপ্রিল তারা এই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে দেয়। পরে তারা অনলাইনে ওই প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ব্যবহার করে বুকিং বিডি ও হেলথ কেয়ার নামে দুইটি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয়। তাদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।