বাজেটের টাকা ছাড় হলেই পাটকল শ্রমিকরা বকেয়া বুঝে পাবে: পাটমন্ত্রী
২৮ জুন ২০২০ ২২:৫৮
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পাটকল শ্রমিকদের সব ন্যায্য পাওনা ও বকেয়া বাজেট পাসের পর অর্থছাড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক। তিনি জানিয়েছেন, ২৬ হাজার পাটকল শ্রমিকের যার যা পাওনা রয়েছে, তার পুরোটাই তারা পেয়ে যাবেন।
রোববার (২৮ জুন) সারাবাংলার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি পাটকল শ্রমিকদের সব দাবি-দাওয়া পূরণে সচেষ্ট। এর আগে গত এপ্রিলেও বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) পরিচালিত পাটকলগুলোর শ্রমিকদের জন্য ১১৬ কোটি টাকা অর্থছাড় করিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেন, শুক্রবার (২৬ জুন) প্রধানমন্ত্রী আমাকে ফোন দিয়েছিলন। তিনি আমাকে বলেছেন, পাটকল শ্রমিকরা আমাদেরই লোক। এদের তো ঠকাতে পারবা না। আমি বলেছি, আপনি তো বঙ্গবন্ধুকন্যা। আপনি তো সবই জানেন। প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে এই শ্রমিকরা আন্দোলন করেছে। সুতরাং এদের ঠকানো যাবে না। এরা যে টাকা চেয়েছে, শতভাগ দিয়ে দাও। আমি যেভাবে পারি, এটা ম্যানেজ করে দেবো।’ এরপর আমরা মন্ত্রণালয়ে আলোচনা করেছি। শ্রমিকদের পাওয়া বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, রোববার (২৮ জুন) আমি আবার প্রধানমন্ত্রীকে ফোন দিয়েছিলাম। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তুমি ঘোষণা দাও, শ্রমিকদের শতভাগ টাকা দিয়ে দেবো। প্রথমে আমরা শ্রমিকদের পাওনা দেবো। এরপর যারা অবসরে গিয়েছে, তাদের পেনশনের টাকাও দিয়ে দেবো। বাজেটের টাকা ছাড় হলে আমরা একবারে ২৬ হাজার শ্রমিকদের পাওয়া দিয়ে দেবো, যেন এই সময়টায় তারা একটা কিছু করে খেতে পারে। যেহেতু আমরা এই মিলগুলোকে পিপিই’র আওতায় আনব, আমাদের শ্রমিক প্রয়োজন হবে। এরাই আবার এখানে চাকরি পাবে। যারা পিপিই’র আওতায় কাজ করবে, তাদের শ্রমিক লাগবে। শ্রমিক ছাড়া কারখানা চলবে না। সুতরাং এখানেই আবার শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। আমরা তাদের চাকরির নিশ্চয়তা দেবো।’
পাটকলগুলোর ইউটিলিটি বিলগুলোর প্রসঙ্গ টেনে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, এরপর আমাদের যেসব ব্যাংক, গ্যাস ও ইলেকট্রিক বিল বকেয়া রয়েছে, সেগুলোও আমরা দিয়ে দেবো। অর্থাৎ সবকিছু পরিশোধ করে তারপর আমরা মিলগুলোকে পিপিই’র আওতায় দিয়ে দেবো। পাট আমাদের ঐতিহ্য। স্বাধীনতার সময় এই পাটকলগুলো আমাদের অর্থনৈতিক শক্তি ছিল। সেই দিন আমরা ফিরে পাব ইনশাল্লাহ।
শ্রমিকদের আবারও আশ্বস্ত করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, শ্রমিকদের আর চিন্তার কিছু নেই। আমি নিজেও শিল্পপতি। আমারও শ্রমিক আছে। আমি যেমন আমার শ্রমিকদের দেখি, পাটকল শ্রমিকদেরও আমি একইভাবে দেখব। তাদের সব দাবি-দাওয়ার সমাধান আমি করব। আমি বিশ্বাস করি, শ্রমিকদের ভয়ের কিছু নেই। বাজেটের টাকা ছাড় হলে আমরা সব টাকা ব্যাংকে দিয়ে দেবো। ২৬ হাজার শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে একবারে টাকা চলে যাবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন শ্রমিকদের মায়া করতেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তেমনিভাবে শ্রমিকদের মায়া করেন। শ্রমিকদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। শ্রমিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন-
মন্ত্রীকে পাটকল শ্রমিকদের ধন্যবাদ, মন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রীকে
‘১৫ দিনের মধ্যে পাটকল শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন’
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর ঘোষণায় পাটকল শ্রমিকদের অনশন প্রত্যাহার
পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধে বিজেএমসিকে ১শ কোটি টাকা বরাদ্দ
গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক পাটকল শ্রমিক পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বকেয়া পরিশোধ বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী