সড়কের ২ প্রকল্পে ১২০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এডিবি
৩০ জুন ২০২০ ২১:৩৯
ঢাকা: সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের দুই প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ২০৭ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), যা মার্কিন ডলারে ১৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। এই ঋণ করোনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। পল্লি সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং বহুমুখী পরিবহন সংযোগ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে এ অর্থ ব্যয় করা হবে।
মঙ্গলবার (৩০) সরকার ও এডিবির মধ্যে দুটি পৃথক ঋণ চুক্তি সই হয়েছে। এতে সরকারের পক্ষে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং এডিবি’র পক্ষে সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ। ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে এ চুক্তি সই হয়েছে।
এডিবির ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পল্লি সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্পে অতিরিক্ত অর্থায়ন হিসেবে ১০ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে। এই অতিরিক্ত অর্থায়ন পল্লি সংযোগ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন বর্তমান রোড নেটওয়ার্ককে ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার থেকে ২ হাজার ৬৩০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা বাড়তে সহায়ক হবে। এটি ২০১৮ সালে অনুমোদিত হয়। অপ্রতুল গ্রামীণ পরিবহন ও বাজারের অবকাঠামো বাংলাদেশের পল্লি উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। বারবার বন্যা কৃষি চেইনগুলোকে পন্ড করে দেওয়ায় দুর্যোগের ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। গ্রামীণ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও কম সবধরণের আবহাওয়া চলাচল উপযোগী রাস্তা ব্যবহার করতে পারে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এছাড়া বহুমুখী পরিবহন সংযোগ উন্নয়নের প্রকল্প তৈরির জন্য হাতে নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে চার কোটি ২০ লাখ ডলার। মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট এবং যোগাযোগ সংযোগের জন্য সড়ক ও রেলপথ খাতে প্রকল্প তৈরির জন্য একটি প্রকল্পের জন্য ৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের চুক্তি সই হয়েছে। এটি পরিবহন সংযোগ উন্নয়নে প্রস্তুতিমূলক সুবিধা ও সম্ভাব্যতা অধ্যয়নের জন্য সহায়ক হবে। এক্ষত্রে বিস্তারিত নকশা, লিঙ্গ, শ্রম এবং অন্যান্য সামাজিক সমস্যার জন্য ঝুঁকি মূল্যায়ন, পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন, জলবায়ু ঝুঁকি এবং দুর্বলতা মূল্যায়ন, পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, পুনর্বাসনের পরিকল্পনা, আদিবাসীদের পরিকল্পনা এবং আসন্ন প্রকল্পগুলোর জন্য ঝুঁকি নিরসনের পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। এছাড়া বন্দর, স্থলবন্দর, এবং সীমান্ত পারাপার পয়েন্টগুলোর সড়ক ও রেল যোগাযোগের উন্নয়নে প্রকল্প তৈরির প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
চুক্তি সইয়ের সময় এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির পরে দ্রুত আর্থ-সামাজিক পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের প্রচেষ্টাতে এ প্রকল্প দুটি অবদান রাখবে। পল্লি সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পটি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থানের সুযোগ, বাজার এবং অন্যান্য সরকারি পরিষেবাগুলোতে সুযোগ সৃষ্টি করবে। এর মাধ্যমে ৩৪টি জেলার প্রায় ৯ কোটি বাসিন্দা উপকৃত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অপর প্রকল্পটি বাংলাদেশের বিভিন্ন পরিবহন পদ্ধতির মধ্যে যোগাযোগ বড়ানো এবং মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট করিডোর জোরদার করার পাশাপাশি বাইপাস নির্মাণ ও অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রসারে সংযোগ স্থাপনে ভূমিকা রাখবে। কোভিড-১৯ এর প্রভাব বিবেচনা করে, শক্তিশালী স্থানীয় এবং বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন নিশ্চিত করার জন্য পরিবহন সংযোগের উন্নতি জরুরি।
তিনি জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বেসরকারি খাতের জন্য যে সুযোগ দেবে, সেইসঙ্গে মাল্টিমোডাল পরিবহন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসহ অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে। এছাড়া এটি পরিবহন ব্যয় এবং সময় হ্রাস ও প্রতিযোগিতামূলক দক্ষতা বৃদ্ধি করে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে।