মাহফিলের প্রচারে বিচারকের নাম, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
২৯ অক্টোবর ২০২০ ২২:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে ‘দোয়া ও ইসলাহি মাহফিল’ নামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অতিথির তালিকায় অনুমতি ছাড়া একজন বিচারকের নাম দিয়ে ফেসবুকে প্রচারের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ মাহফিলস্থলে অভিযান চালিয়ে বেশকিছু প্রচারপত্র জব্দ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) চট্টগ্রামের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (প্রেষণে বাঁশখালী চৌকিতে) সাঁটলিপিকার মো. বদরুদ্দোজা বাদি হয়ে বাঁশখালী থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শনিবার (৩১ অক্টোবর) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হেফাজতে ইসলামের আমীর প্রয়াত শাহ আহমদ শফী ও প্রয়াত পীরে কামেল শাহ মোহাম্মদ তৈয়ব স্মরণে ‘দোয়া ও ইসলাহি মাহফিলের’ আয়োজন নিয়ে পোস্টার-ব্যানার ছাপিয়ে ও ফেসবুকে প্রচারণা চালাচ্ছে ‘পুকুরিয়া ইসলাম প্রচার সংস্থা’ নামে একটি সংগঠন। এতে অতিথির তালিকায় ‘মাহাবুবুর রহমান, জেলা ও দায়রা জজ, বান্দরবান’ লেখা আছে।
বাদি অভিযোগ করেছেন, বান্দরবানে মাহাবুবুর রহমান নামে কোনো জেলা ও দায়রা জজ নেই। বান্দরবানের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নাম মাহবুবুর রহমান। তার পৈতৃক বাড়িও বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নে। ব্যক্তিগত জীবনের তিনি ইসলামি শরীয়াহ মেনে চলেন, কিন্তু তিনি কোনো দল-মতের সঙ্গে যুক্ত নন। এরপরও তার সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই বিনা অনুমতিতে ভুল পদবি দিয়ে নাম লিখে প্রচারণা চালানোর কারণে এই বিচারক সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়েছেন, যা বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের সামিল বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।
বিচারকের নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রচার-প্রচারণা চালানোর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ (১) এর ক-ধারা, ২৬ (১) এবং ২৯ (১) ধারায় মামলা গ্রহণ করেছে পুলিশ।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম মজুমদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘একজন বিচারকের অনুমতি ছাড়া দোয়া মাহফিলের পোস্টার-ব্যানার ও লিফলেটে নাম ব্যবহার এবং ফেসবুকে প্রচারের অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর আমরা মাহফিল যে এলাকায় হবে, সেখানে গিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া বেশকিছু লিফলেট জব্দ করেছি।’
মামলার বাদি মো. বদরুদ্দোজা সারাবাংলাকে বলেন, ‘বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মাননীয় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্যারের নির্দেশে আমি মামলাটি দায়ের করেছি। বিনা অনুমতিতে একজন সম্মানিত বিচারকের নাম ব্যবহার গর্হিত অপরাধ। এটা পুরো বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে বলে আমরা মনে করি। আশা করি, পুলিশ দ্রুত জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেবে।’