করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে ইউরোপের দেশগুলোতে একযোগে টিকাদান কর্মসূচি চালু হয়েছে। খবর ডয়চে ভেলে।
এদিকে, কয়েকটি দেশ শনিবারেই (২৬ ডিসেম্বর) করোনা টিকাদান শুরু করে দিলেও রোববার (২৭ ডিসেম্বর) থেকে সবাই আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের আওতায় এসেছে।
গত সপ্তাহেই ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
পাশাপাশি, শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) দিনের শেষে এবং শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিনের প্রথম ভাগেই সদস্য দেশগুলোর কাছে ভ্যাকসিনের প্রথম চালান পৌঁছে দিয়েছে ইইউ। টিকা পাওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই কর্মসূচি চালু করে দিয়েছে জার্মানি, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া। রোববার (২৭ ডিসেম্বর) থেকে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে বাকি দেশগুলোতেও।
অন্যদিকে, ইউরোপের ২৭ দেশের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছে হাঙ্গেরি। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) হাতে পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে তারা। এর কিছুক্ষণ পরই করোনা টিকাদান শুরু করে হাঙ্গেরির প্রতিবেশি দেশ স্লোভাকিয়া। সেখানে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় নিয়োজিত প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মীরা শুরুতে টিকা নিয়েছেন।
অপরদিকে, জার্মানিতে প্রথম টিকাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন হালবারস্টাডট শহরের নার্সিং হোমে বসবাসরত ১০১ বছর বয়সী একজন নারী। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, রোববার (২৭ ডিসেম্বর) থেকে সব রাজ্যে টিকাদান কর্মসূচি চালুর কথা থাকলেও ততক্ষণ অপেক্ষা করেনি স্যাক্সনি-আনহাল্ট।
এ ব্যাপারে জার্মান সম্প্রচারমাধ্যম এমডেআর’র কাছে অঞ্চলটির একটি টিকা কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ইমো ক্রেমার জানিয়েছেন – তাদের জন্য প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ, তাই তারা সময় নষ্ট করতে চাননি।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) জার্মানির ১৬ রাজ্যের প্রতিটিতে প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার ডোজ করে টিকা পাঠানো হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শুরুতে নার্সিং হোমের বাসিন্দা, আশি বছরের ওপরে বয়স্ক নাগরিক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকার আওতায় আসবেন।
এ ব্যাপারে জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান বলেছেন, তারা এত মানুষকে টিকার আওতায় আনতে চান যেনো জার্মানি এবং ইউরোপে করোনাভাইরাসের কোনো অস্তিত্ব না থাকে।
পাশাপাশি, টিকা নেওয়ার মাধ্যমেই মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি। এই বছরের বাকি সময়ের মধ্যেই জার্মানি ১৩ লাখ টিকা হাতে পাবে। জানুয়ারি নাগাদ প্রতি সপ্তাহে সাত লাখ ডোজ করে টিকা পাওয়া যাবে। আর মার্চের মধ্যে ফাইজার-বায়োএনটেকের কাছ থেকে মোট এক কোটি ভ্যাকসিন পাওয়ার আশা করছেন স্পান। দেশটির পাঁচ কোটি জনগোষ্ঠীকে যার মাধ্যমে টিকাদানের আওতায় আনা সম্ভব হবে। তবে, এক্ষেত্রে একা হাঁটা নয় বরং জার্মানি ইউরোপের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে চায় বলে জানান তিনি।
ওদিকে, আট কোটি ৩০ লাখ জনগোষ্ঠীর জার্মানিতে মোট ৪০০ টিকা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি নাগাদ সবাইকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা করছে জার্মান সরকার।