‘দুলাল ওপরে গিয়ে দেখে সোফায় শোয়ানো আনুশকা’
১৩ জানুয়ারি ২০২১ ১২:৩৯
ঢাকা: মাস্টারমাইন্ড স্কুলের শিক্ষার্থী আনুশকা নুর আমিন ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ফারদিন ইফতেখার দিহানের বাসার নিরাপত্তারক্ষী দুলাল মিয়াকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও জবানবন্দি নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। দুলাল ঘটনার পর থেকে পালিয়ে ছিল।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) রাতে কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুলাল এই মামলার আসামি নন। তাকে সোমবার (১১ জানুয়ারি) পুলিশ হেফাজতে নিয়ে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি যতটুকু জানেন, আমরা ততটুকু জানার চেষ্টা করেছি। সকালে তাকে আদালতে নেওয়া হয়েছিল। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তিনি লিখিত জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দুলালের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুলাল আমাদের বলেন, দিহান ওই ছাত্রীকে বাসায় নিয়ে গেলে দারোয়ান তাকে কিছু বলেননি। এর এক ঘণ্টা পর দিহান ইন্টারকমে তাকে ফোন কেরে ওপরে উঠতে বলেন। ওপরে গিয়ে দারোয়ান দেখেন, মেয়েটিকে সোফায় শুইয়ে রাখা হয়েছে। মেয়েটি তখন অচেতন অবস্থায় ছিল। ওই সময় সোফায় রক্ত লেগে ছিল। পরে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য তাদের গাড়িতেও তুলে দেন দুলাল। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর তিনি বাসা থেকে পালিয়ে যান।’
এদিকে আনুশকার বাবা দাবি করে বলেন, ‘ঘটনা একা ঘটায়নি দিহান। আনুশকাকে যেভাবে পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে এতে আরও কেউ জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করছি। কেবল পুলিশই পারে মূল রহস্য উদঘাটন করতে।’
আরও পড়ুন:
- আনুশকাকে ধর্ষণ পূর্বপরিকল্পিত— জিজ্ঞাসাবাদে দিহান
- মাস্টারমাইন্ড শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যা, ৪ সহপাঠী আটক
- মাস্টারমাইন্ডের ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা: দিহানের দোষ স্বীকার
- আনুশকার বয়স বাড়িয়ে দিহানের শাস্তি কমানোর ‘অপতৎপরতা’!
- ধর্ষণের পর হত্যায় দিহানের দোষ স্বীকার, পাঠানো হলো কারাগারে
- ‘আনুশকা ধর্ষণের শিকার কিনা তা ফরেনসিক পরীক্ষায় জানা যাবে’
- বিকৃত যৌনাচারের শিকার ছিলেন আনুশকা, রক্তক্ষরণে মৃত্যু: ফরেনসিক
গত ৭ জানুয়ারি দুপুরে ধানমন্ডিতে আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওই শিক্ষার্থীর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একই সময় দিহানসহ তিন বন্ধুকেও আটক করা হয়। পরে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার দিন রাতে নিহত ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় মামলা করেন। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে ফরেনসিক চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানান, বিকৃত যৌনাচারের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে।
৮ জানুয়ারি দিহানে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। কিন্তু দিহান আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। তখন আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। দিহান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। অন্যদিকে দিহানের তিন বন্ধুকেও ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম