ঢাকা: ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিনের ২০ লাখ ডোজ উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে পাঠাচ্ছে ভারত। আগামী বুধবার (২০ জানুয়ারি) এই ভ্যাকসিন দেশে এসে পৌঁছাবে।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ভ্যাকসিন দেশে আনার জন্য অনাপত্তিপত্র চাওয়া হয়েছিল অধিদফতরের কাছে। এ সংক্রান্ত অনাপত্তিপত্র দেওয়াও হয়েছে।
আরও পড়ুন-
- ২৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রথম ধাপে আসছে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন
- ভ্যাকসিন কিনতে সিরামকে ৫০৯ কোটি টাকা পাঠাল বাংলাদেশ
- এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ, তারপর মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ হবে ভ্যাকসিন
- বেক্সিমকোকে ভ্যাকসিন আমদানির অনুমতি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন
- আগেই চুক্তি হওয়ায় সিরামের ভ্যাকসিন পেতে সমস্যা হবে না: বেক্সিমকো
- নিবন্ধন শুরু ২৬ জানুয়ারি: যেভাবে কাজ করবে করোনা ভ্যাকসিনের অ্যাপ
সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার এই ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন উপহার হিসেবে পাঠানোর সিদ্ধান্তটি আজ সোমবারই জানানো হয়েছে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ তথ্য অবহিত করা হয়। ভারতীয় হাইকমিশনও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানায়। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারকে (সিএমএসডি)।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি হেলথ) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জানিয়েছেন,
সোমবার বিকেল নাগাদ বিষয়টি জানার পর এই ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আনতে স্বাস্থ্য অধিদফতর অনাপত্তিপত্রের জন্য আবেদন করেন তারা।
জানতে চাইলে মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সারাবাংরাকে বলেন, বুধবার ভারত থেকে উপহার হিসেবে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশকে পাঠানো হবে। আমাদের কাছে এ বিষয়টি জানিয়ে এই ভ্যাকসিনের জন্য অনাপত্তিপত্র চাওয়া হয়েছিল। আমরা সেই অনাপত্তিপত্র দিয়েছি। এখন বুধবার এই ভ্যাকসিন আসতে কোনো বাধা নেই।
এর আগে, সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, ভারত থেকে ২৫-২৬ জানুয়ারি নাগাদ ভ্যাকসিনের প্রথম লট আসবে। এছাড়া ভারত সরকার কিছু ভ্যাকসিন উপহারও দেবে বাংলাদেশকে। উপহার হিসেবে পাঠানো সেই ভ্যাকসিন যেকোনো সময় চলে আসবে। ভারত কী পরিমাণ ভ্যাকসিন উপহার হিসেবে দেবে— সেটি অবশ্য ওই সময় নিশ্চিত করে বলতে পারেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
গত নভেম্বরে ভারতের সিরাম ইনস্টিউটের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন কিনতে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সই হয়। ভারতের সিরামের সঙ্গে ওই চুক্তির দেশীয় দুই অংশীদার হলো বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
চুক্তি অনুযায়ী, সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার করোনা ভ্যাকসিন দেশে আমদানি করবে বেক্সিমকো ফার্মা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর জানিয়েছে, বেক্সিমকো এই ভ্যাকসিন দেশে আনার পর তাদের নিজেদের ওয়্যারহাউজে সংরক্ষণ করবে। এরপর দেশের নির্ধারিত জেলা ইপিআই কোল্ড স্টোরেজগুলোতে সেগুলো নিজ দায়িত্বেই পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো। পরে সেসব ইপিআই কোল্ড স্টোরেজ থেকে ভ্যাকসিন সরকারি ব্যবস্থাপনায় পৌঁছে যাবে ভ্যাকসিনেশন সেন্টারগুলোতে।