বিজ্ঞাপন

আগেই চুক্তি হওয়ায় সিরামের ভ্যাকসিন পেতে সমস্যা হবে না: বেক্সিমকো

January 4, 2021 | 5:49 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ভারত সরকার ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও আগে থেকেই চুক্তি হয়ে যাওয়ার কারণে সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে ভ্যাকসিন পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। চুক্তি অনুযায়ী সিরামকে অগ্রিম অর্থ দেওয়া হলে এবং দেশে ভ্যাকসিনটির নিবন্ধন দেওয়া হলে সময়মতোই এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আসবে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে এক ব্রিফিংয়ে এমন আশাবাদ জানানো হয়েছে সিরামের ভ্যাকসিন দেশে আমদানির জন্য সরকার ও সিরামের সঙ্গে যুক্ত তৃতীয় পক্ষ বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এদিন বেক্সিমকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

এর আগে, রোববার (৩ জানুয়ারি) ভারত সরকার করোনা প্রতিরোধে দেশটির ওষুধ নির্মাতা সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন জরুরি প্রয়োগের জন্য অনুমোদন দেয়। একইসঙ্গে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের দেশের চাহিদা না মিটিয়ে যেন ভ্যাকসিন অন্য কোনো দেশে রফতানি না করা হয়।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

এদিকে, দেশে করোনা ভ্যাকসিন আমদানির জন্য এর আগে এই সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গেই চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশ সরকার ও দেশের পক্ষে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ওই চুক্তি সই করে। চুক্তি অনুযায়ী বেক্সিমকোর মাধ্যমে সিরাম বাংলাদেশকে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেবে।

এর মধ্যে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে প্রশ্ন ওঠে— বাংলাদেশ সিরামের এই ভ্যাকসিন পাবে কি না। এর মধ্যে দুপুরে স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান এক অনুষ্ঠানে জানান, সিরামের সঙ্গে চুক্তিটি জি-টু-জি (দুই দেশের সরকার পর্যায়ের চুক্তি) হওয়ায় বাংলাদেশের ভ্যাকসিন পেতে সমস্যা হবে না।

বিজ্ঞাপন

ব্রিফিংয়ে নাজমুল হাসান পাপনও সিরামের ভ্যাকসিন পাওয়ার আশাবাদ জানান। তবে চুক্তিটি কোনোভাবেই জি-টু-জি নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

পাপন বলেন, ভারত সরকার সিরামকে যেভাবে ভ্যাকসিন রফতানি করতে নিরুৎসাহিত করেছে, সেটি যৌক্তিক। তবে আমাদের সঙ্গে সিরামের যে চুক্তিটি হয়েছে, সেটি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। এ ধরনের চুক্তি বাতিল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশ এই ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন দিলে একমাসের মধ্যে ভ্যাকসিন চলে আসবে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশ পাবে, এটি নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখছি না।

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের এই এমডি আরও বলেন, ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য চুক্তি অনুযায়ী দুইটি কাজ করতে হবে বাংলাদেশকে। প্রথমত, ভ্যাকসিনের জন্য কিছু টাকা অ্যাডভান্স পরিশোধ করতে হবে। সেটির জন্য আরও কয়েকদিন বাকি আছে। এর সঙ্গে ভ্যাকসিন বাংলাদেশে প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি দিতে হবে। এই দু’টি কাজ যত দ্রুত করা সম্ভব হবে, তত দ্রুত বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আসবে।

পাপন জানান, এরই মধ্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কাছে সিরাজের এই ভ্যাকসিন দেশে প্রয়োগের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। ওষুধ প্রশাসন অধিধফতর অনুমোদন দিলে সেটি সিরামকে জানিয়ে দিতে হবে। তাহলে আর এই ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।

বিজ্ঞাপন

সিরামের সঙ্গে চুক্তি জি-টু-জি নয় উল্লেখ করে পাপন বলেন, আমি জানি না উনি (স্বাস্থ্য সচিব) কিভাবে জি-টু-জি চুক্তির কথা বলেছেন। তবে আমাদের এই চুক্তি জি-টু-জি নয়। এই চুক্তিতে সিরাম একটি পক্ষ, বেক্সিমকো একটি পক্ষ, বাংলাদেশ সরকার একটি পক্ষ। এটি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী সিরাম ভ্যাকসিন উৎপাদন করবে, বাংলাদেশ সরকার ভ্যাকসিনের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও টাকা দেবে। আর বেক্সিমকো সিরামের কাছ থেকে এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশে নিয়ে আসবে।

ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়ে ফের আশাবাদ জানিয়ে পাপন বলেন, এ ধরনের আন্তর্জাতিক চুক্তি আমরা আরও অনেক করেছি। কোনোটিই বাতিল হয়নি। আরেকটি কথা আমি বলতে চাই। করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে কিন্তু ভারত করোনা চিকিৎসায় সংশ্লিষ্ট ওষুধের কাঁচামাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। আমরা কিন্তু ওই সময়ও এসব কাঁচামাল এনেছি। কারণ আমাদের সঙ্গে তাদের চুক্তি ছিল আগে থেকেই। আমরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত— আমাদের যে চুক্তিটি হয়েছে, সেটি ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে না। আমরা যথানিয়মে ভ্যাকসিন পাব।

এসময় তিনি সরকারের পক্ষে করণীয় দুইটি বিষয়— অগ্রিম অর্থ পরিশোধ ও ভ্যাকসিনের অনুমোদন— দ্রুত শেষ করার আহ্বান জানান।

ফাইল ছবি

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন