চট্টগ্রামে ছাত্রীরা এগিয়ে, জিপিএ৫ বাড়ল সাড়ে ৪ গুণ
৩০ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৪৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়া গড় মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রকাশিত ফলাফলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে শতভাগ পাসের পর জিপিএ৫ বেড়েছে আগের বছরের চেয়ে অন্তত সাড়ে চার গুণ। ফলাফলে যথারীতি ছাত্রদের পেছনে ফেলে এগিয়ে আছে ছাত্রীরাই।
করোনা পরিস্থিতিতে এবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড থেকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। তবে শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে মেইলে গণমাধ্যমের কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। সেজন্য কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল না। শিক্ষার্থীরা ফলাফল পেয়েছেন অনলাইনে।
আরও পড়ুন-
- এইচএসসি পাস করাদের জন্য আরও সুসংবাদ
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভিড় না করার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
- মোবাইল-ওয়েবে যেভাবে জানা যাবে এইচএসসির ফল
- এইচএসসি’র এই ফলও পুনঃমূল্যায়নের আবেদন করা যাবে
- ফেব্রুয়ারিতে নয়, মার্চে খুলবে স্কুল-কলেজ— ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর
- সারাদেশে জিপিএ৫ ১,৬১,৮০৭: সবচেয়ে বেশি ঢাকায়, কম সিলেটে
- শিশুদের হতাশায় ফেলবেন না— এইচএসসির ফলপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘করোনার কারণে আমরা এবার এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পারিনি। তবে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরের গড় মূল্যায়নের ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। জেএসসি ও এসএসসির প্রধান বিষয়গুলোকে মূলত মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’
এসএসসি পরীক্ষার পর যারা বিভাগ পরিবর্তন করেছেন, তাদের কিভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কো-সাবজেক্ট ধরে মূল্যায়ন করা হয়েছে। অনেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করেছেন। কিন্তু কো-সাবজেক্ট হিসেবে কমার্সের একটি সাবজেক্ট তো ছিল। সেটাতে প্রাপ্ত নম্বরকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে মূল্যায়ন আসলেই কঠিন। সেজন্য এবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ৫ গত বছরের চেয়ে সাড়ে চার গুণ বেড়ে গেছে।’
এক্ষেত্রে কেউ প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফল, কেউ বঞ্চিত হয়েছেন কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভালোটাই বেশি হয়েছে। আমাদের কাছে তো অন্য কোনো অপশন ছিল না। কিন্তু শিক্ষার্থীদের উচিত হবে— এক্ষেত্রে এইচএসসির গড় মূল্যায়নের ফলটাকেই একমাত্র ভিত্তি হিসেবে ধরে না নিয়ে ভালো করে পড়ালেখার মাধ্যমে সেটার যোগ্য হয়ে ওঠা।’
২০২০ সালে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীন ২৬৫টি কলেজে পরীক্ষার্থী ছিল ৯৭ হাজার ৯৬৭ জন। শতভাগ উত্তীর্ণের ফলাফলে জিপিএ৫ পেয়েছে ১২ হাজার ১৪৩ পরীক্ষার্থী, যা গত চার বছরে সবচেয়ে বেশি। এবার ৬ হাজার ৩৯৬ জন ছাত্রী ও ৫ হাজার ৭৪৭ জন ছাত্র জিপিএ৫ পেয়েছেন।
২০১৯ সালে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ২ হাজার ৮৬০ জন জিপিএ৫ পেয়েছিল। এছাড়া ২০১৮ সালে ১ হাজার ৬১৩ জন, ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৯১ জন ও ২০১৬ সালে ২ হাজার ২৫৩ জন শিক্ষার্থী জিপিএ৫ পেয়েছিল।
এবারের ফলাফলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে সর্বোচ্চ জিপিএ৫ এসেছে, মানবিকে সবচেয়ে কম। তিন বিভাগেই ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরা বেশি জিপিএ৫ পেয়েছে।
বিজ্ঞানে ১০ হাজার ৪৩ জন জিপিএ৫ পেয়েছে। এর মধ্যে ছাত্র ৫ হাজার ৯৩ জন, ছাত্রী ৪ হাজার ৯৫০ জন। ব্যবসায় শিক্ষায় জিপিএ৫ পেয়েছে ১ হাজার ৫৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১ হাজার ১২৩ জন, ছাত্র ৪৫২ জন। মানবিক বিভাগে ৫২৫ জন জিপিএ৫ পেয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রী ৩২৩ জন, ছাত্র ২০২ জন।
২০১৯ সালে বিজ্ঞানে ২ হাজার ২৫৮ জন জিপিএ৫ পেয়েছিল। ব্যবসায় শিক্ষায় জিপিএ৫ পেয়েছিল ১২৯ জন। মানবিক বিভাগে ৪৭৩ জন জিপিএ৫ পেয়েছিল।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারের ফলাফলেও ছাত্রীরা খুব ভালো করেছে। জিপিএ৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে তারা ছাত্রদের চেয়ে এগিয়ে আছে।’
সারাবাংলা/আরডি/টিআর
এইচএসসি ও সমমান এইচএসসি পরীক্ষা চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড জিপিএ৫ টপ নিউজ