`সরকার বিভাজন-হিংসার রাজনীতিকে বাড়াচ্ছে‘
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:০৫
সরকার দেশে বিভেদ-বিভাজন আর হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতিকে ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে বলে মন্তব্য করেছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। একইসঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হওয়া লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুকে এক ধরনের হত্যাকাণ্ড আখ্যায়িত করে এর বিচার দাবি করেছে দলটি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাবে এসব কথা বলা হয়। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আবু হাসান টিপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক দেশের সর্বশেস রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও করণীয় সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করেন।
সভার শুরুতে প্রখ্যাত সাংবাদিক ও লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, বিশিষ্ট ব্যাংকার খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হওয়া লেখক মুশতাক আহমেদের মর্মান্তিক মৃত্যু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মাহমুদ হোসেনের মাতা সুফিয়া বেগমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
ওই রাজনৈতিক প্রস্তাবে বলা হয়, সরকার দেশে বিভেদ-বিভাজন আর হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতিকে ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে। একদিকে তারা শক্তিশালী বিরোধী দল থাকার কথা বলছে, আর অন্যদিকে বিরোধী দল ও মতের বিরুদ্ধে দমন-নিপীড়ন আর হামলা-আক্রমণ ও হয়রানির রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস অব্যাহত রেখেছে। বিরোধী দলসমূহকে কিভাবে ছত্রভঙ্গ আর চাপে রাখা যায়, প্রতিনিয়ত সেই চেষ্টাই করে আসছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক কর্মসূচিকেও তারা সহ্য করতে পারছে না। সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলছে, বাস্তবে তারা নিজেরাই চরমপন্থী কৌশল অবলম্বন করছেন। এই পরিস্থিতি দেশকে মহাবিপর্যয়ের পথে ঠেলে দিচ্ছে। সভার প্রস্তাবে সরকারের এই চরম কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে গণতান্ত্রিক ধারার সকল বিরোধী দল ও জনগণের কার্যকরী বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হয়।
আরেক প্রস্তাবে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারকৃত লেখক মুশতাক আহমেদের বন্দি অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। একইসঙ্গে কারাবন্দি অবস্থায় মুশতাককে জামিনে মুক্তি না দিয়ে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। মুশতাকের মৃত্যুকে এক ধরনের হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করে এই ঘটনার বিশ্বাসযোগ্য নিরপেক্ষ তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। এছাড়াও সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, দেশে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে আর অসুস্থ্য লেখককে হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতার করে জামিন পর্যন্ত দেওয়া হয় না।
এ সময় দলটির কেন্দ্রীয় নেতা বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আনছার আলী দুলাল, রাশিদা বেগম, সজীব সরকার রতন, এ্যাপোলো জামালী, শহীদীল আলম নান্নু, ফিরোজ আহমেদ, স্নিগ্ধা সুলতানা ইভা, সাইফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সংগঠক রহিমা বেগম ও ইমরান হোসেনসহ আরও অনেকেই রিপোর্টের ওপর আলোচনা করেন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এনএস