দেশে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমণ কমলেও বেড়েছে মৃত্যু। এই সময়ে দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন ১০ জন, আগের দিন যা ছিল ছয় জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৫৪০ জন, আগের দিন যা ছিল ৬৩৫ জন। এর ফলে টানা তিন দিন পর ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ ছয়শ’র নিচে নেমে এলো। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন ৮২২ জন, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় দেড়শ জন বেশি।
এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৪ জনে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৮ হাজার ৪৫১ জন। আর সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লাখ ১ হাজার ৯৬৬ জন।
শনিবার (৬ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানার সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ২১৯টি পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১১৮টি, জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ২৯টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাব ৭২টি। ল্যাবগুলোর মধ্যে সরকারি ল্যাবের সংখ্যা ১৫০টি, বেসরকারি ল্যাব ৬৯টি।
এসব ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৮৩৪টি। আগের দিনের নমুনাসহ নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৮২টি। এ নিয়ে দেশে ৪১ লাখ ৩২ হাজার ১১৩টি নমুনা পরীক্ষা হলো। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৯টি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৯ লাখ ৫৬ হাজার ৩৩৪টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় যেসব নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৫৪০টি নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৪ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হলো। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ১৩ শতাংশে, আগের দিন যা ছিল ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এখন পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। শনাক্তের বিপরীতে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
একই সময়ে করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন ৮২২ জন। এ নিয়ে মোট ৫ লাখ ১ হাজার ৯৬৬ জন করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন। সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৩১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১০ জন মারা গেছেন, তার মধ্যে সাত জন পুরুষ, তিন জন নারী। মোট মৃত ব্যক্তির মধ্যে ৬ হাজার ৩৮৮ জন (৭৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ) পুরুষ, নারী ২ হাজার ৬৩ জন (২৪ দশমিক ৪১ শতাংশ)। তাদের সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বয়স বিবেচনায় দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব চার জন। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী তিন জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী দুই জন ও ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী একজন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে চার জন ঢাকা বিভাগের, দু’জন করে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিভাগের এবং একজন করে আছেন খুলনা ও বরিশাল বিভাগের।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, শনিবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত দেশে মোট ৪৮ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৪ জন করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছেন মোট ৩৫ লাখ ৮১ হাজার ১৬৯ জন। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের দুই ডোজ গ্রহণের ন্যূনতম দুই সপ্তাহ পর থেকে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। তাই এই সময়ে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলছে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এ কারণে ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে ও পরেও মাস্ক ব্যবহারসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।