বিনা দোষে চারমাস জেল খেটে আদালত থেকে মুক্তি
১২ মার্চ ২০২১ ১৪:০০
বেনাপোল: যশোরে বিনা দোষে চারমাস জেল খাটার পরে আদালত থেকে মুক্তি পেয়েছেন মিন্টু মোল্লা নামে এক দিনমজুর। একটি ঋণ খেলাপি মামলায় আশরাফ আলীর জায়গায় পুলিশ মিন্টুকে আটক করে জেলহাজতে পাঠায়। মিন্টু মোল্লা বেনাপোলের দিঘিরপাড় এলাকার মৃত মোহর আলী মোল্লার ছেলে।
ভুক্তভোগী মিন্টু মোল্লা জানান, তিনি পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন। আবার কখনও দিনমজুরের কাজও করেন। গত বছরের ১৬ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে তার বাড়িতে হাজির হন বেনাপোল পোর্ট থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মাসুম ও একই এলাকার চৌকিদার কালা কবির। দিঘিরপাড়া এলাকার মৃত মোহর আলীর ছেলে আশরাফ আলীর নামে এক ব্যক্তির নামে আদালতের দেওয়া এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত একটি গ্রেফতারি পরোয়ানার কপি হাতে মিন্টুকে আটকের চেষ্টা করেন তারা। এসময় তিনি আশরাফ আলম না বলে জানান। কিন্তু কোনো কথাই শুনতে রাজি হননি সেই দারোগা ও চৌকিদার। রাতেই তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকালে পরিবারের লোকজন জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি নিয়ে থানায় গেলেও তাকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়াতে পারেনি। ফলে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। কিন্তু জেলখানার মধ্যে দরবার ফাইলে অভিযোগ করেন মিন্টু। কোন কাজেই আসেনি তার নালিশ। গত শনিবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শনে যান লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা। তাকে বিষয়টি জানালে তিনি আদালতকে অবহিত করেন। পরে লিগ্যাল এইডের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে জানতে পারেন আশরাফ আলী অন্য এক ব্যক্তি। ফলে এদিনই যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক মিন্টুকে খালাস দেন।
মিন্টুর স্ত্রী ফাহিমা বেগম বলেছেন, তার স্বামীর বিরুদ্ধে কোন মামলা নাই। দুইটি ছেলে নিয়ে কোন মতে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান তার স্বামী মিন্টু। ঘটনার দিন গত বছরের ১৬ নভেম্বর রাতে এলাকার চৌকিদার কালা কবির ও থানার এসআই মাসুম বিনা দোষে তার স্বামীকে আটকের পর জেল খানায় পাঠালো। প্রায় চার মাস তার স্বামী জেলে থাকায় অর্ধহারে অনাহারে তাদের দিন পার হয়েছে।
বৃহস্পতিবার আদালত মিন্টুকে মুক্তি দেয়ায় স্ত্রী ফাহিমা বেগম সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, দেশে এখনো ন্যায় বিচার আছে। কিছুদিন পরে হলেও তার স্বামীর জন্য ন্যায় বিচার পেয়েছেন।
ব্লাস্টের যশোর জেলার সমন্বয়কারী প্রধান অ্যাডভোকেট মোস্তফা হুমায়ুন কবির বলেন, কোর্ট যখন আসামিকে গ্রেফতারের জন্য আদেশ দিয়েছেন, তখন পুলিশ সেটা যাচাই না করেই তাকে বিনা অপরাধে চার মাস কারাভোগ করিয়েছে। এই দায় আমরা কেউই এড়াতে পারি না।
সারাবাংলা /এসএসএ