ঢাকা: জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকের নেতৃত্বে ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলোসহ বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের (বিএনএ) সঙ্গে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক জোট হচ্ছে। এরশাদ কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যানারে এই জোট পরিচালিত হবে। প্রায়ত এরশাদের জন্মদিনে এই জোটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ইসলামিক দল ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালাইন্সের (বিএনএ) নেতারা বিদিশার সঙ্গে জোট নিয়ে বৈঠক করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০১৭ সালে ৮ মে এসব রাজনৈতিক দল নিয়ে নির্বাচনি একটি জোট করেন। গত নির্বাচনে এই জোটের কাউকেই জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন দেয়নি। এতে তারা অনেকটা ক্ষুব্ধ হন। সম্প্রতি বিএনএ এবং ইসলামিক রাজনৈতিক জোটের শীর্ষ নেতারা জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে জোট নিয়ে কথা বলেন। জিএম কাদের তাদের জানিয়ে দিয়েছেন জাতীয় পার্টি বর্তমানে মহাজোটে নেই। এমনকি তাদের সঙ্গেও নেই। এ সময় নেতারা জিএম কাদের বলেন, বিষয়টি সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেন। কারণ এরশাদ যখন জোট করেছিলেন তিনি তখন লিখিতভাবে সেটি করেন।
জিএম কাদেরের আচরণকে অসৌজন্যমূলক মনে করে তারা সেখান থেকে চলে আসেন। পরে তারা বিদিশা সিদ্দিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিদিশাও তাদের প্রস্তাব লুফে নেন। সুত্র জানায়, চলতি মাসে এরিক এরশাদের জন্মদিনে এই জোটের নেতারা অংশ নেন। এছাড়া আগামী ১৯ মার্চ এরশাদের জন্মদিনে তারা এরশাদের বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে সমবেত হবেন বলে জানা গেছে।
এ সব বিষয় নিয়ে বিদিশা সিদ্দিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই জোট করা হচ্ছে। শিগগিরই এই জোট জনস্বার্থে দৃশ্যমান কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে।’
বিএনএ জোটের নেতা ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির মহাসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখেই জোট করা হবে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে কবে, কখন আনুষ্ঠানিকভাবে এই জোট আত্মপ্রকাশ করবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’
বিদিশিা সিদ্দিকের নেতৃত্বে এই জোট যারা থাকছে তাদের মধ্যে রয়েছে বিএনএ জোটের ২২টি রাজনৈতিক দল। সেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ লেবার পার্টি (একাংশ), গণতান্ত্রিক ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, আমজনতা পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ইসলামি ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ প্রতিবাদী জনতা পার্টি, বাংলাদেশ তফসিল ফেডারেশন, বাংলাদেশ সচেতন হিন্দু পার্টি, ইউনাইটেড মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ গণজাগরণ পার্টি, বাংলাদেশ গ্রামীণ পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামিক গণতান্ত্রিক লীগ, তৃণমূল লীগ, গণ-অধিকার পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল মাইনরিটি পার্টি, বাংলাদেশ পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ জনতা ফ্রন্ট, জাতীয় হিন্দু লীগ ও বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি।
এছাড়া ইসলামি মহাজোটের যে ৩৩টি দল বিদিশার সঙ্গে যোগ দিচ্ছে সেগুলো হলো- জাতীয় ইসলামি জোট, ওলামা মাশায়েখ সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফেডারেশন, জমিয়তে মুসলেমিন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক লীগ, শরিয়া আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জনতা পার্টি, খেলাফত সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ ইসলামিক জনকল্যাণ পার্টি, জাতীয় শরিয়া আন্দোলন, বাংলাদেশ ইসলামি গণ-আন্দোলন, জাতীয় ইসলামি আন্দোলন, জাতীয় ইসলামিক মুভমেন্ট, ইসলামি মূল্যবোধ সংরক্ষণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, ন্যাপ ভাসানী, বাংলাদেশ ইসলামি আক্বীদা সংরক্ষণ আন্দোলন, খেদমতে খালক পার্টি, বাংলাদেশ ইত্তেহাদুল মুসলেমিন, বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট বই পার্টি, হেফাজতে মুসলেমিন বাংলাদেশ, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত বাস্তবায়ন পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, মুসলিম জনতা পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফাতুল উম্মাহ, বাংলাদেশ আকিমুদ্বীন মজলিশ, ইসলামী আক্বীদা সংরক্ষণ পার্টি, ইউনাইটেড ইসলামিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইসলামি পার্টি, ইসলামি সমাজকল্যাণ আন্দোলন ও লিবারেল পার্টি বাংলাদেশ।