Tuesday 10 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আরটি পিসিআর ল্যাবে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে বিমানবন্দর

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০০:১৮

ঢাকা: বাংলাদেশসহ ১০টি দেশ থেকে আগতদের জন্য ফ্লাইটের ছয় ঘণ্টা আগে বিমানবন্দর থেকেই র‍্যাপিড পিসিআর পদ্ধতিতে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষার শর্ত আরোপ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাব স্থাপনে সাত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতিও দিয়েছে সরকার। তবে র‌্যাপিড পিসিআর নয়, শাহজালালে প্রস্তুতি চলছে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনের। শর্ত অনুযায়ী র‌্যাপিড পিসিআর স্থাপন না করে আরটি-পিসিআর ল্যাবের মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষা করলে সেটি আমিরাত কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কি না, স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে সে প্রশ্ন। এর সঙ্গে জোরালোভাবে যে প্রশ্নটি উঠছে সেটি হলো— বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন করলে জৈব সুরক্ষা কতটা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ নমুনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের জন্য বিমানবন্দরের পার্কিং জোনের ছাদকে নির্বাচন করেছে। এক্ষেত্রে নমুনা সংগ্রহের পরে ফলাফল জানানো পর্যন্ত যাত্রীরা কোথায়, কিভাবে নিরাপদে অবস্থান করবেন সেটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ নমুনা জমা দেওয়ার পরে তারা যদি বাইরে থেকে যায় সেক্ষেত্রে অন্যান্য স্থানে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে যদি বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে নমুনা পরীক্ষা করানো হয় তবে ঝুঁকির মাত্রা কিছুটা কমে আসে। আরটি-পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার জন্য বায়োসেফটি লেভেল থেকে শুরু করে ল্যাবের প্রতিটি স্তরের নিরাপত্তা যথাযথভাবে নিশ্চিত করা না গেলে পুরো বিমানবন্দরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ল্যাবসহ বিমানবন্দরে কর্মরত ও যাতায়াতকারী প্রতিটি ব্যক্তি থাকবেন সংক্রমণের ঝুঁকিতে। সংক্রমণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

কর্তৃপক্ষও বিমানবন্দরে এই জৈব সুরক্ষা বলয় ভেদ করে সংক্রমণের ঝুঁকি স্বীকার করে নিচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিকল্প পরিকল্পনা করতে হবে বলেও মনে করছে তারা। তবে বিমানবন্দরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তার দায় নিতে রাজি নয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং বেসমারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কেউই।

আরটি-পিসিআর পদ্ধতি কী?

করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করতে নমুনা পরীক্ষার জন্য ‘মলিকুলার মেথড’কে আদর্শ মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এরই একটি ‘আরটি-পিসিআর’, অর্থাৎ রিভার্স ট্রান্সক্রিপ্টেজ পিসিআর প্রক্রিয়া। করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্তে এই পদ্ধতিকেই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মনে করা হয়। এই পদ্ধতিতে নাক কিংবা গলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সেই নমুনা ‘এক্সট্র্যাক্ট’ করে তারপর পিসিআর মেশিনে পরীক্ষা করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত হলেও এর জন্য প্রয়োজন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পিসিআর ল্যাব থেকে যেন সংক্রমণ না ছড়ায় তার জন্য ন্যূনতম বায়োসেফটি লেভেল-২ (জৈব সুরক্ষা বলয়) নিশ্চিত করতে হয়। একইসঙ্গে জীবাণু যেন ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য ল্যাবকে সুরক্ষিত রাখতে হয় নেগেটিভ প্রেশার দিয়ে। নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে পরীক্ষার ফল পাওয়ার আগ পর্যন্ত এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে বজায় রাখতে হয়। কেবল ল্যাবই নয়, আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা করতে হলে নমুনাদাতা ব্যক্তির জন্যও রয়েছে সুনির্দিষ্ট প্রটোকল। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে সংক্রমিত হতে পারে ল্যাব, ল্যাবের স্থান, ল্যাবের টেকনোলজিস্টসহ এর সংস্পর্শে আসা যেকোনো ব্যক্তি।

আরও পড়ুন:

আরটি-পিসিআর ল্যাবে বিমানবন্দর কেন ঝুঁকিতে?

করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করতে দেশে শুরুতেই আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও রোগ গবেষণা কেন্দ্রে (আইইডিসিআর)। ২০২০ সালের এপ্রিলের শেষ ভাগে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে সেটি বন্ধ রাখা হয়। প্রায় একই সময়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজেও নমুনা পরীক্ষা বন্ধ থাকে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা আরটি-পিসিআর ল্যাবের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে। আর সেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পেছনেও ছিল বায়োসেফটি তথা জৈব সুরক্ষা বলয় নিশ্চিত রাখতে না পারা।

আইইডিসিআর কিংবা মেডিকেল কলেজগুলোর মতো জায়গাতে যেখানে আরটি-পিসিআর ল্যাবের জৈব সুরক্ষা বলয় নিশ্চিত করা যায়নি, সেখানে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও একই ঝুঁকি উড়িয়ে দিতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বিমানবন্দরে সাতটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এই ল্যাব স্থাপন করলে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার নমুনা পরীক্ষা হবে। একই স্থানে সাত সাতটি আরটি-পিসিআর ল্যাবের জৈব সুরক্ষা বলয় নিশ্চিত করার কাজটি সহজ নয় কোনোভাবেই।

বেবিচক অবশ্য বলছে, খুব দ্রুতই বিশেষায়িত ভ্যানের মধ্যে স্থাপিত মোবাইল ল্যাবে আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা করানো শুরু হবে। এতে বিমানবন্দরে সংক্রমণ ছড়াবে না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নমুনা সংগ্রহের পর পিসিআর মেশিনে যাওয়ার আগে এক্সট্রাকশন পদ্ধতি ব্যবহার করতেই হবে। ফলে মোবাইল ল্যাব থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থাকবে না, এটি হলফ করে বলা যায় না। এ ক্ষেত্রে আমিরাত সরকার নির্দেশিত র‌্যাপিড পিসিআর পদ্ধতি প্রয়োগ করলে বরং সংক্রমণের ঝুঁকি বহুলাংশে কমে আসবে। কেননা র‌্যাপিড পিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষার জন্য নমুনা এক্সট্রাকশন করার কোনো প্রয়োজন হবে না।

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

জানতে চাইলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজিস্ট সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, আরটি-পিসিআর ল্যাবের মাধ্যমে আমাদের দেশে নমুনা পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষার জন্য যে মানের ল্যাব স্থাপন করা প্রয়োজন, তার জন্য অবশ্যই সময় দিতে হবে। কারণ এর সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ন্যূনতম বায়োসেফটি লেভেল-২ ও জিরো প্রেশার নিশ্চিত করা না গেলে এই ল্যাবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না।

তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে আমাদের যে প্রবাসীরা যাবেন, তাদের ভ্রমণের ৪৮ ঘণ্টার আগে একবার আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। ওই পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল এলে তারা বিমানবন্দরে যাবেন। সেখানে ফ্লাইটের ছয় ঘণ্টা আগে নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে র‍্যাপিড পিসিআর পদ্ধতিতে। এরপর আবার সেই দেশের যাওয়ার পরে আরেকবার আরটি-পিসিআর পদ্ধতির নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। এর মাঝে প্রথম দুইটির ফল নেগেটিভ এলেও তৃতীয় পরীক্ষায় যে পজিটিভ আসবে না, তার নিশ্চয়তা নেই। আর এখানেই ল্যাবের জৈব সুরক্ষা বলয়ের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যেকোনো মুহূর্তে হতে পারে। যে ব্যক্তি নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন, তিনি হয়তো নমুনা দেওয়ার সময় সংক্রমিত নন। কিন্তু কোনোভাবে ল্যাবের জৈব সুরক্ষা বলয় ভঙ্গ হলে ল্যাব থেকেই তিনি সংক্রমিত হতে পারেন, যেটি হয়তো আমিরাতে যাওয়ার পরের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হতে পারে। আবার ল্যাবে যারা কাজ করছেন, তাদেরও যদি বাইরে যাতায়াতের সুযোগ থাকে, তারা যেকোনো সময় সংক্রমিত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে নিজেরা তাৎক্ষণিকভাবে পজিটিভ শনাক্ত না হলেও তার মাধ্যমে কিন্তু সংক্রমণ ছড়ানোর সুযোগটা থাকছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি মুহূর্তে প্রতিটি ধাপে সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য সুরক্ষা বলয় কঠোরভাবে নজরদারির মধ্যে রাখার বিকল্প নেই।

কোভিড-১৯ ল্যাবরেটরি পরীক্ষা সম্প্রসারণ নীতিমালা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী সারাবাংলাকে বলেন, আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা করালে যেকোনো সময়েই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। সেক্ষেত্রে বিমানবন্দরের মতো সংবেদনশীল একটি স্থানের জন্য এটি আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই কঠোর সতর্কতা প্রয়োজন। কেননা বিমানবন্দরে একবার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে সেটি গোটা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে সমালোচনার মুখে ফেলে দেবে। একইসঙ্গে বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত আসলে কী চাইছে, সেটি জানা প্রয়োজন। ‘পয়েন্ট অব ডায়াগনস্টিক’ বিবেচনায় র‍্যাপিড পিসিআর নমুনা পরীক্ষা আর আরটি-ল্যাম্প পদ্ধতিতে পরীক্ষা বিবেচনা করা হয়ে থাকে। এসব প্রযুক্তির বিষয়ে ২০২০ সালে মাঝামাঝি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। এখানে দেখার বিষয় হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের চাহিদা। ওরা কী চাচ্ছে? র‌্যাপিড পিসিআরের জায়গায় আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা করালে তারা গ্রহণ করবে কি না— এ বিষয়টি তাদের কাছেই নিশ্চিত হতে হবে। এছাড়া আসলে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অণুজীববিজ্ঞানী সারাবাংলাকে বলে, আরটি-পিসিআর ল্যাব মানেই সংক্রমণের ঝুঁকি। এ ক্ষেত্রে বায়োসেফটি লেভেলের মনিটরিংটা আরও অনেক বেশি কঠোর হতে হবে। আর সংযুক্ত আরব আমিরাত র‍্যাপিড পিসিআরের কথা বললে সেখানে আরটি-পিসিআর গ্রহণযোগ্য হবে কি না, সেটি বড় প্রশ্ন। তারা আরটি-পিসিআর গ্রহণ করলে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে। সেটি না করতে পারলে কোনো ফ্লাইটের যাত্রীদের তারা আটকে দিলে সেটি অত্যন্ত বিব্রতকর হবে। আর তারা যদি ফ্লাইটের ছয় ঘণ্টা আগের পরীক্ষাটি আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে গ্রহণ না-ই করে, তাহলে বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনের তো কোনো যৌক্তিকতাই থাকছে না। তখন কি আবার আরটি-পিসিআর ল্যাব তুলে দিয়ে র‌্যাপিড পিসিআর মেশিন বসানো হবে? এর মধ্যে যে সময় ও অর্থ খরচ হচ্ছে, তার ক্ষতিপূরণ কে দেবে?

কর্তৃপক্ষ কী বলছে?

বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনে সংক্রমণের ঝুঁকি বিষয়ে জানতে চাইলে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন সারাবাংলাকে বলেন, ঝুঁকি তো থাকেই। যথাযথভাবে নিরাপত্তা বলয় নিশ্চিত করা না গেলে এই ঝুঁকি যেকোনো স্থানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে যারা বিদেশে যাবেন তারা যদি ৪৮ ঘণ্টা আগে নমুনা জমা দিয়ে নেগেটিভ ফলও পেয়ে থাকেন, ফ্লাইটে ওঠার আগে তারাও কিন্তু পজিটিভ হতে পারেন। ফলে ঝুঁকিটা থাকছেই।

তিনি আরও বলেন, আরটি-পিসিআর ল্যাবের ভেতরেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। বলা হচ্ছে বিমানবন্দরে কনটেইনারে বা ভ্যানে বা পার্টিশন দিয়ে ল্যাব স্থাপন করে নমুনা পরীক্ষা করাবে। এক্ষেত্রে কেবিনেটেও জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে। এটি স্বাভাবিক বিষয়। তবে যেসব ল্যাবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তাদের একটি বিকল্প পরিকল্পনা রাখার বিষয়েও বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে যদি ল্যাব বা কোনো ব্যক্তির মাঝে সংক্রমণ পাওয়া যায়, তবে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান অবশ্য আরটি-পিসিআর ল্যাব থেকে ঝুঁকি দেখছেন না। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, এখানে ঝুঁকির তেমন কিছু নেই। একটু কষ্ট হলেও সেভাবে সবকিছু ম্যানেজ করতে হচ্ছে। এজন্যেই আমাদের একটি মোবাইল ল্যাবকে ঘিরে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, আরটি-পিসি আর মেশিনের মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষা করালে তারা গ্রহণ করবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, যাত্রীরা তো ৪৮ ঘণ্টা আগে নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে নেগেটিভ হয়েই আসছে। এখানে তাদের পজিটিভ হওয়ার সম্ভাবনা তেমন নেই। সেই সম্ভাবনা খুবই অল্প। বায়োসেফটি লেভেল নিশ্চিত করে এখানে ল্যাব স্থাপন করা হবে। বিমানবন্দর সংক্রমিত যেন না হতে পারে, সেজন্য যাত্রীদের অন্যদের সঙ্গে মিশতে দেওয়া হবে না। তারা নমুনা জমা দিয়ে ইমিগ্রেশনে আসবে ফলাফল নিয়ে। এজন্যেই আমরা পার্কিং জোনকে নির্বাচন করেছি পুরো আইসোলেশনের জন্য।

বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ-আশঙ্কার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মফিদুর রহমান বলেন, ‘এটা তো বললামই যে অল্প আশঙ্কা থাকে।’ সেই ঝুঁকি থেকেই বিমানবন্দরে সংক্রমণ ছড়ালে দায় কে নেবে— এমন প্রশ্নের জবাবে তার উত্তর, ‘এর দায় নিতে হবে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে।’

বেবিচক চেয়ারম্যান দায় দিতে দুই মন্ত্রণালয়কে দেখিয়ে দিলেও এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে দুই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই মন্ত্রী ইমরান আহমেদ ও জাহিদ মালেকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পায়নি সারাবাংলা।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

আরটি-পিসিআর ল্যাব জৈব সুরক্ষা বায়োসেফটি লেভেল বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব র‌্যাপিড পিসিআর সংযুক্ত আরব আমিরাত


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর