নৌপথ আগের চেয়ে অনেক নিরাপদ: খালিদ মাহমুদ চৌধুরী
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২:৩৬
ঢাকা: সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নৌপথ এখন আগের চেয়ে অনেক নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার নদী দখলমুক্ত এবং নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিশেষ করে নৌযান মালিক, শ্রমিক, নাবিক, নৌ পুলিশ বা কোস্টগার্ড কর্মকর্তাদের পদক্ষেপে নৌযান দুর্ঘটনা অনেকখানি কমে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে নৌপরিবহন অধিদফতরের উদ্যোগে বিশ্ব নৌ দিবস ২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনার এবং সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (স্বার্থরক্ষা) আইনের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার কারও প্রতিপক্ষ হিসেবে নয়; সবাইকে নিয়েই এ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চায়। আমরা যেভাবে সম্মিলিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ করে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছি। সেই চেতনা আমরা ধারণ করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হচ্ছে সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে বিধিমালা অনুযায়ী সমস্যার সমাধান করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর কোনো দেশের বাণিজ্য যুদ্ধ বা অন্য কোনো দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সুযোগসন্ধানী ভূমিকায় থাকতে চাই না। আমরা নিজস্ব দক্ষতায় কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আলোর পথে নিয়ে আসছেন মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘদিন এই বাংলাদেশ অন্ধকার থেকে অন্ধকারে তলিয়ে গেছে। অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। এই ১২ বছরে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে। আমরা দরিদ্র থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। অর্থনীতির সকল সূচকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়।’
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিনি শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই নন; বিশ্ব সভায় একজন দক্ষ নেতৃত্ব হিসেবে সুনাম অর্জন করে অহংকারের জায়গায় চলে গেছেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রধানমন্ত্রীর এ অবস্থানের কারণে আমরা গর্ববোধ করি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি, পঁচাত্তরের পর বাংলাদেশকে যারা অন্ধকারে তলিয়ে দিয়েছিল, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করেছিল। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে তাদের মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে পারব।’
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন অধিদফতরের নতুন অনলাইন সেবা উদ্বোধন করা হয়। এই বছর বিশ্ব নৌ-দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘নাবিকরাই নৌপরিবহন ব্যবস্থার মূল ভবিষ্যৎ’।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন সেক্টরে বিশেষ অবদানের জন্য পাঁচটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। পুরস্কার ও সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন— শিপ একুইজিশনের জন্য এস আর শিপিং লিমিটেড, গ্রীন শিপ রিসাইক্লিনিংয়ের জন্য পিএইচপি শিপ রিসাইক্লিন, শিপ ফেয়ারার্স এমপ্লয়মেন্টের জন্য হক এন্ড সন্স লিমিটেড, মেরিটাইম ট্রেনিংয়ের জন্য বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী এবং সাগরে সাহসিকতার জন্য এম ভি জাওয়াদ জাহাজের ক্যাপ্টেন নাসির উদ্দিন এবং ক্রুগণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, বাংলাদেশ ওশান গোয়িং শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আজম জে চৌধুরী, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী, চট্টগ্রাম এর কমান্ড্যান্ট নৌ প্রকৌশলী ড. সাজিদ হোসেন এবং নৌপরিবহন অধিদফতরের চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার ক্যাপ্টেন কে এম জসীমউদ্দিন সরকার। নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর এ জেড এম জালাল উদ্দিন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সারাবাংলা/একে