‘আওয়ামী লীগ দানবে পরিণত হয়েছে, দেশ চালাচ্ছে আমলারা’
১২ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:৫১
ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছে, ‘আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নয়। এটা এখন দানবে পরিণত হয়েছে। সত্যিকার অর্থে আওয়ামী লীগ কিন্তু দেশ চালায় না। দেশ চালায় আমলারা।’
রোববার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কৃষক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা গণতন্ত্রের বাইরে দেশ পরিচালনা করছে। আপনারা দেখেছেন যে, তারা কী অবস্থা করেছে এই বাংলাদেশের। বেশিদূর যাওয়ার দরকার নেই। গতকাল আপনারা দেখেছেন র্যাব এবং তাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। তাদের যে প্রধান কর্মকর্তা তাদের সেখানে (আমেরিকা) অগ্রহণযোগ্য বলা হচ্ছে এবং বলা হচ্ছে যে, সেখানে তারা যেতে পারবে না, তাদের কোনো সম্পত্তি থাকলে বাজেয়াপ্ত করা হবে।’
‘এটা একটা দেশের জন্য লজ্জার কথা। আমরার প্রায় ৭৪ বছর বয়স। আমি তো কোনো দিন শুনিনি আমাদের কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপরে এ রকম কলঙ্কজনক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটা ভয়াবহ সংকটের মধ্যে আছি। এই সংকট কেবল বিএনপির না, খালেদা জিয়ার না। এই সংকট সমগ্র জাতির। আজ এমন একটা অবৈধ, বেআইনি সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে, যারা আমাদের সমস্ত অর্জন- যা আমরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছিলা, নব্বয়ের গণঅভ্যুথানের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছিলাম, তা ধ্বংস করে দিয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার মানুষের অধিকারে বিশ্বাস করে না। আমার সাংবিধানিক অধিকার যে আমি মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারব, আমার সাংবিধানিক অধিকার যে আমি স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারব, আমার সাংবাধানিক অধিকার যে আমি সভা-সমাবেশ করতে পারব, আমার সাংবিধানিক অধিকার যে আমি ন্যায় বিচার পাব- সমস্ত অধিকার তারা কেড়ে নিয়ে আমাদেরকে সত্যিকার অর্থেই একটা বন্দি জাতিতে পরিণত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে- এটা আমরা বহুবার বলেছি, বলছি। কেন? আমরা জানি- একটা মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। কারণ কী? কারণ একটাই, দেশনেত্রীকে বাইরে রাখা যাবে না। উনি যদি বাইরে থাকেন, তাহলে উনার মধ্যে জনগণের জন্য যে ভালোবাসা আছে, যে ক্ষমতা আছে জনগণকে জাগিয়ে তুলবার, যে ক্ষমতা আছে লড়াই করবার- সেই লড়াইকে তারা ভয় পায়। সেই জন্য তারা তাকে আটকে রেখেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জানি দেশনেত্রী অত্যন্ত অসুস্থ। এই জন্য ডাক্তাররা বলেছেন, তার বাইরে যাওয়া প্রয়োজন, এখনই বাইরে যাওয়া প্রয়োজন। কেন? এইখানে আমাদের সেই চিকিৎসাটা নেই, যেই চিকিৎসাটা দিলে তিনি সুস্থ হবেন। অর্থাৎ তাকে বাইরে না নিলে হবে না। কিন্তু তারা (সরকার) সেটা করতে দিচ্ছে না, দিতে চাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত তারা এ ব্যাপারে কর্ণপাত করছে না। বরং তারা অত্যন্ত শিষ্টাচার বহির্ভূত, রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত অনেক কথা-বার্তা বলছেন।
‘আমরা মনে করি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে পাঠানোর জন্য, সুচিকিৎসার জন্য শুধু কথায় কিছু হবে না। এ জন্য আমরা যে আন্দোলন শুরু করেছি, এই আন্দোলনের গতি-প্রকৃতিকে আরও কঠোর করতে হবে, দুর্বার করতে হবে এবং দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাকে মুক্ত করেই আমরা তাকে সুচিকিৎসার জন্য বাইরে পাঠাতে পারব, তাকে আবার আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনতে পারব। এই জন্য আমাদের যেটা প্রয়োজন, সেটা হলো সংগঠনকে শক্তিশালী করা। যদি সংগঠন শক্তিশালী থাকে, তাহলে আপনি সব আন্দোলনে সফল হতে পারবেন, যদি সংগঠন শক্তিশালী না হয়, তাহলে আপনি কোনো আান্দোলনে সফল হতে পারবেন না।’
সারাবাংলা/এজেড/এনএস