Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএনপির আন্দোলন কেবল খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য নয়: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:১৯

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: বিএনপির চলমান আন্দোলন কেবল খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন নয়, সমগ্র দেশ ও জাতির মুক্তির আন্দোলন- এমনটিই মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ এ সভা আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে। আজকের আন্দোলন কেবলমাত্র দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন নয়, সমগ্র দেশের, সমগ্র জাতির মুক্তির আন্দোলন। আজকে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে গেছে, আমাদের সমস্ত অর্জন ধ্বংস হয়ে গেছে। সেই কারণেই আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে একটা জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে চাই এবং এই ভয়াবহ দানবীয় আওয়ামী লীগ সরকারকে পরাজিত করতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘প্রায় ১ মাসের ওপরে আমরা রাজপথে আন্দোলন করছি। আমরা গণঅনশন করেছি, সমাবেশ করেছি, প্রতিবাদ সভা করেছি। আমরা প্রত্যেকটা বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করেছি। পুলিশের নির্যাতনের পরও আমাদের নেতাকর্মীরা সব জায়গা আন্দোলন শুরু করেছে। জনগণ বেরিয়ে আসছে। আমরা বিশ্বাস করি, সবাই বেরিয়ে আসবে। তখন আমরা সেই আন্দোলন শুরু করতে পারব, যেই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের নেত্রীকে বের করে নিয়ে আসতে পারব।’

বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার অবদানের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘১৯৭১ সালে জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে যখন স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তখন এই মহিয়সী নারী কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু সেইদিন তিনি সেনাদেরকে পরামর্শ দিতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, কখনই জিয়াউর রহমানের অনুমতি ছাড়া পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করবে না। তারপর তার দুই শিশুপুত্র তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোকে নিয়ে পালিয়ে ঢাকায় এসে আত্মীয়র বাসায় ওঠেন এবং সেখান থেকে তাকে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী গ্রেফতার করে। ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি সেখানে থাকেন।’

তিনি বলেন, ‘এরপর শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে যখন এ দেশের শত্রুতা হত্যা করেছিল এবং তারা ও আওয়ামী লীগ যখন ভেবেছিল- বোধ হয় বিএনপি শেষ হয়ে গেল, বোধ হয় স্বাধীনতাকামী মানুষ ধ্বংস হয়ে গেল, তখন বেগম খালেদা জিয়া সেই পতাকা জিয়াউর রহমানের হাত থেকে তুলে নিয়েছিলেন। সেই পতাকা হাতে নিয়ে গ্রাম-গ্রামান্তরে, পথে-প্রান্তরে গণতন্ত্রের গান গেয়ে মানুষকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। ৯ বছর সংগ্রাম করে, স্বৈরাচারকে পরাজিত করে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন।’

‘সেই নেত্রীকে আজকে সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাকে আটক করে রাখা হয়েছে। এই আটক করে রাখা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না, এটা একটা চক্রান্তের বহিঃপ্রকাশ। ১/১১ তে যে চক্রান্ত শুরু হয়েছিল, বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ করা হবে, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হবে, সেই সংক্রান্ত এখন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী আমাদের আশা-ভরসার স্থল আজ অত্যন্ত অসুস্থ। এতো অসুস্থ যে এখন ডাক্তাররাই বলছেন- তিনি জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে এবং পরীক্ষিা নিরীক্ষা করে তারা বলছেন যে, এখন যে চিকিৎসা তার দরকার, সেই চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই। কিন্তু এই সরকার- যাদের জগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, যারা জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, যারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তারা তাকে বাইর যেতে দিতে চায় না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা আদেশ দিয়েছে- শর্ত সাপেক্ষে তাকে বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। এটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। খালেদা জিয়াকে নিয়ে তাদের ভয়- এই মহিলাকে যদি বের হয়ে আসে তাহলে তাদের তক্তে তাউস ভেঙে খান খান হয়ে যাবে। এই কারণেই তারা তাকে বাইরে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না।’

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শওকত মাহমুদুরে সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামীম, ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/এনএস

টপ নিউজ বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর