‘আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে’
২০ ডিসেম্বর ২০২১ ২১:১৫
ঢাকা: আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায় ও বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে আওয়ামী লৗগ আজ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিতে পরিণত হয়েছে। কারণ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে তার দুই শিশু পুত্রের হাত ধরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী দ্বারা গ্রেফতার হয়ে তিনি ক্যান্টনমেন্টের কারাগারে বন্দি ছিলেন ১৬ ডিসেম্বব পর্যন্ত। আজ আপনারা (সরকার) তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রেখেছেন। এখন তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াই করছেন, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার দাবি করে, তারা বাংলাদেশে উন্নয়নের বন্যা বইয়ে দিয়েছে। অথচ এই ৫০ বছরে গরিব আরও গরিব হয়েছে। কেবল আওয়ামী লীগের সহায়তাপুষ্ট, মদতপুষ্ট কিছুসংখ্যক বড়লোক আরও ধনী হয়েছে। আজ আমাদের দেশের কৃষকেরা তাদের পণ্যের দাম পাচ্ছে না, শ্রমিকেরা তাদের শ্রমের ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না। তারা (সরকার) আমাদের সমস্ত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে, শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলেছে, আমাদের অর্থনীতিকে সত্যিকার অর্থে পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এই অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে। আর সময় নেই। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, সব রাজনৈতিক শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় শক্তিকে পরাজিত করে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে, একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই সরকার একটি দানবীয় সরকার। আজ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশের একটি সংস্থার কর্মকর্তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি আমাদের জন্য লজ্জার খবর। আজ সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে কোথাও জায়গা পাচ্ছেন না, তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে। এসব কাদের জন্য হচ্ছে? আজ যারা ক্ষমতায় জোর করে দখল করে আছে তাদের জন্য, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকারের জন্য।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু; ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান; চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ও আবুল খায়ের ভুঁইয়া; কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন ও আবদুস সালাম আজাদ; ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আমিনুল হক; যুবদলের সাইফুল আলম নিরব; স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান; মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান; কৃষক দলের হাসান শহিদুল ইসলাম বাবুল; মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাবসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর