অসময়ে বৃষ্টি: আলু চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:০৭
জয়পুরহাট: অসময়ের বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন আলু চাষের সঙ্গে জড়িতরা। শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাত থেকে অঝর ধারায় চলমান বৃষ্টিতে অধিকাংশ আলুক্ষেত ডুবে গেছে। হিমাগারে রাখার জন্য ক্ষেত পরিচর্যা করলেও অসময়ের বৃষ্টিতে ডুবে যাওয়া আলু নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন আলুচাষীরা।
আর কৃষি বিভাগ বলছেন, বৃষ্টি থেমে গেলে ক্ষতির আশঙ্কা কেটে যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানাচ্ছে, আবহাওয়া ভালো থাকায় জয়পুরহাট জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে জয়পুরহাট সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার হেক্টর, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০ হেক্টর, ক্ষেতলালে ৯ হাজার হেক্টর এবং আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার ঘুনা পাড়া গ্রামের কৃষক আক্কাস আলী জানান, তিনি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। এর মধ্যে এক বিঘা জমির আগাম জাতের আলু বিক্রি করেছেন। বাকি জমিতে আলু রয়েছে। এমনিতে আলুর দাম কম, তারপর হঠাৎ বৃষ্টিতে জমির আলু পানিতে ডুবে আছে।
ক্ষেতলাল উপজেলার তিলাবদুল গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন জানান, অধিক লাভের আশায় কৃষকরা এবার আগাম আলু চাষ করেছেন। বিঘা প্রতি যার উৎপাদনে খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু মৌসুমের শুরু থেকে আলুর দাম না থাকায় কিছুটা বিপাকে পড়েছেন তারা।
আক্কেলপুর উপজেলার ভিকনি গ্রামের কৃষক ছাইদুর রহমান জানান, জমি থেকে সেচ দিয়েও পানি সরাতে পারছেন না। কারণ মাঠ পানিতে ডুবে আছে পানি যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। এভাবে দু-তিনদিন আলু পানিতে ডুবে থাকলে সব আলু নষ্ট হয়ে যাবে। এতে করে বিপুল ক্ষতিতে পড়তে হবে।
কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানী বলেন, লাভ-লোকসান যা-ই হোক আলুর আবাদ তাদের প্রধান ফসল। গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবারও তিনি ৮ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। আর কয়েক দিন পর আলু উত্তোলন করার পর ওই জমিতে আবার বোরো ধানের চারা রোপন করার কথা। হঠাৎ বৃষ্টিতে আলুর জমি পানিতে ডুবে গেছে। এভাবে আলু পানিতে ডুবে থাকায় বেকায়দায় পড়েছে তিনি।
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শফিকুল ইসলাম জানান, জেলায় দু’দিনে ১৭ দশমিক ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ বছর জেলায় ৪০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করেছে কৃষকরা। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩০ ভাগ জমির আলু তোলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, হঠাৎ করে এই বৃষ্টিতে আলুর জমিতে পানি জমে গেছে। এতে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে। অসময়ে আবহাওয়ার এমন বৈরিতা কেটে লোকসান নয় আলুতে লাভবান হয়ে শেষ হাসি হাসবেন কৃষকরা এমন প্রত্যাশ কৃষি বিভাগের।
সারাবাংলা/একেএম