স্কুল-কলেজ খোলার ঘোষণা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:৫৯
ঢাকা: দুই দফা ঘোষণায় প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর ২২ ফেব্রুয়ারি খুলতে যাচ্ছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠকের সেটিই এবার সিদ্ধান্ত আকারে ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিং করার কথা রয়েছে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পরপরই মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। ওই বৈঠকে কারিগরি পরামর্শক কমিটিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষেই মত দিয়েছে। ফলে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তের কথা আজকের সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেবেন শিক্ষামন্ত্রী।
আরও পড়ুন- মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পরামর্শ কারিগরি কমিটির
খুলবে মাধ্যমিক থেকে
কারিগরি পরামর্শক কমিটিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে না। ১২ বছরের বেশি বয়সী যেসব শিক্ষার্থী ভ্যাকসিন নিয়েছে, কেবল তাদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে বলেছে পরামর্শক কমিটি।
বুধবার রাতে এই কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. সহিদুল্লাহ এবং কমিটির আরেক সদস্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম খান সারাবাংলাকে জানিয়েছিলেন, দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়াসাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠদান উন্মুক্ত করতে বলেছেন তারা। সেক্ষেত্রে মাধ্যমিক পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে খুলে দেওয়ার পক্ষে অবস্থান তাদের।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় কারিগরি পরামর্শক কমিটির এই সুপারিশ আমলে নিলে সপ্তম শ্রেণি থেকে পরবর্তী পর্যায়ের শ্রেণির জন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হতে পারে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে। কারণ দেশে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন ১২ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। আর ১২ বছর বয়সীরা মূলতই সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
প্রাথমিকের সিদ্ধান্ত আরও ২ সপ্তাহ পর
মাধ্যমিক থেকে খুললেও প্রাথমিকের বিষয়ে এখন পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পক্ষে মত আসেনি কারও কাছ থেকেই। কারিগরি পরামর্শক কমিটিও এখনই প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার পক্ষে মত দেয়নি। এই পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এখনো ভ্যাকসিন দেওয়ার সুযোগ হয়নি। ফলে সংক্রমণ পরিস্থিতির আরও উন্নতি হওয়ার আগ পর্যন্ত এসব শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পক্ষে অবস্থান নেয়নি কমিটি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রও বলছে, প্রাথমিকের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে আরও সপ্তাহ দুয়েক সময় নিতে পারে মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিও একই ইঙ্গিত দিয়েছেন গণমাধ্যমকে।
এর আগে, এ বছরের শুরু থেকেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকলে গত ২১ জানুয়ারি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন, ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পরে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদ ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।
এর আগে, গত ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেবার দফায় দফায় ছুটি বাড়তে বাড়তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে প্রায় দেড় বছর। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এসে আবার বিভিন্ন শর্ত মেনে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু হয়। মাস পাঁচেক যেতে না যেতেই ফের বন্ধ হয়েছিল শিশু-কিশোরদের স্কুলযাত্রা। এবার অবশ্য একমাসের বেশি স্থায়ী হচ্ছে না সেই মেয়াদ।
সারাবাংলা/টিআর