নিউ মার্কেটে সংঘর্ষের মামলায় বিএনপি নেতা মকবুল গ্রেফতার
২২ এপ্রিল ২০২২ ২০:৫৭
ঢাকা: ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে নিউ মার্কেট এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ধানমণ্ডির বাসা থেকে মকবুলকে গ্রেফতার করা হয় জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার।
মকবুল হোসেন নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি। ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্টফুড নামের যে দুই দোকানের কর্মচারীদের দ্বন্দ্ব থেকে গত সোমবার রাতে নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়, সেই দোকান দুইটি সিটি করপোরেশন থেকে মকবুলের নামে বরাদ্দ হওয়া। তবে কোনো দোকানই নিজে চালাতেন না।
রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুজনকে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন দোকান দুটি। রফিকুল ও শহিদুল আবার পরস্পরের আত্মীয়।
দোকান মালিকদের ভাষ্য, ইফতারের টেবিল বসানো নিয়ে ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কর্মীদের বচসার পর এক পক্ষ ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মীকে ডেকে আনে। তারা গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর ছাত্রাবাসে ফিরে আরও শিক্ষার্থীদের নিয়ে সোমবার মধ্যরাতে নিউ মার্কেটে হামলা চালাতে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
মঙ্গলবার দিনভর চলা এই সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
তাদের মধ্যে এক দোকানকর্মী আর এক ডেলিভারিম্যান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি এবং নিহত দুজনের পরিবারের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়।
এর মধ্যে সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর আক্রমণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ভাঙচুর ও জখম করার অভিযোগে এক মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে মকবুলকে।
এ মামলায় মোট ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে; তারা সবাই ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।
মামলায় নাম আসা বাকিরা হলেন: আমীর হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু, হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারি, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহীদুল ইসলাম শহীদ, জাপানি ফারুক, মিজান ব্যাপারী, আসিফ, রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, তোহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ২৪ জন এজাহারনামীয়সহ ব্যবসায়ী-কর্মচারী অজ্ঞাতনামা ৩০০ জন। এছাড়া একই মামলায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে ঢাকা কলেজের ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা আরেকটি মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ছাড়া নাহিদ হাসান নিহতের ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করেছে তার পরিবার। এই মামলায় ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। তিন মামলায় মোট অজ্ঞাতনামা আসামি হলেন ১৪০০ জন।
এর আগে, সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও মঙ্গলবার সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন
নিউমার্কেটে সংঘর্ষ: হত্যাসহ ৩ মামলার প্রতিবেদন ৭ জুন
নিউমার্কেটে সংঘর্ষ: ৩ মামলায় আসামি ১২০০
নিউমার্কেটের সংঘর্ষে আহত যুবকের মৃত্যু
ছাত্র-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ, মারা গেলেন আরও একজন
সংঘর্ষের শুরু থেকে পুলিশের ভূমিকা ছিল নিরপেক্ষ: ডিবি
নিউমার্কেটে সংঘর্ষ: আহতদের দেখতে ঢামেকে শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নয় সংঘর্ষ শুরু ২ দোকানের কর্মচারীদের মধ্যে
সারাবাংলা/ইউজে/একে