‘প্রস্তুতি না থাকায় মুহিতের মরদেহ নেওয়া হচ্ছে না জাতীয় সংসদে’
৩০ এপ্রিল ২০২২ ১০:৪৯
ঢাকা: সাবেক অর্থমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম জানাজা হবে গুলশানের কেন্দ্রীয় মসজিদে (আজাদ মসজিদ)। এরপর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় তার দ্বিতীয় জানাজা হওয়ার কথা ছিল। তবে প্রস্তুতি না থাকায় মুহিতের মরদেহ সেখানে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রথম জানাজার পরই সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ শহিদ মিনারে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তার ছোট ভাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে গুলশানে আজাদ মসজিদের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এখানেই মুহিতের প্রথম জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে।
ড. আবদুল মোমেন বলেন, গত দুই বছর কোভিডের কারণে সেখানে (সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা) কোনো ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। ফলে সেখানে (মুহিতের মরদেহ) নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
জানা গেছে, ইদুল ফিতর সামনে রেখে সরকারি ছুটি শুরু হওয়া জাতীয় সংসদ ও সংসদ সচিবালয়ের বেশিরভাগ কর্মী ছুটিতে চলে গেছেন। ফলে সেখানে আবুল মাল আবদুল মুহিতের জানাজা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন-
- সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিতের মৃত্যুতে শোক
- সাবেক অর্থমন্ত্রী আবদুল মুহিত আর নেই
- সদ্যপ্রয়াত মুহিতের দখলে বাজেট উত্থাপনের ২ রেকর্ড
- আমলা থেকে রাজনীতিবিদ-অর্থমন্ত্রী— বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার মুহিতের
আবদুল মোমেন জানান, গুলশান আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে সব স্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মুহিতের মরদেহ নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে নেওয়া হবে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহটি সড়ক পথে নিয়ে যাওয়া হবে সিলেটে। সেখানে আগামীকাল রোববার (১ মে) পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে মুহিতের মরদেহ।
এর আগে, শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। ৮৮ বছর বয়সী মুহিত বার্ধক্যসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তিনি একাধারে ছিলেন ভাষাসৈনিক, অর্থনীতিবিদ লেখক।
সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা আবুল মাল আবদুল মুহিত তৎকালীন পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দফতরে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮১ সালে সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে অর্থনীতি ও উন্নয়ন নিয়ে গবেষণায় নিযুক্ত হন। এসময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার হয়ে কাজ করেন তিনি। পরে ২০০১ সালে তিনি যোগ দেন রাজনীতিতে। পরের বছরই আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনোনীত হন। আমৃত্যু দলের সেই পদে বহাল ছিলেন তিনি।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুহিত। এসময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। পরে ২০১৪ সালেও সংসদ সদস্য এবং টানা দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে দুই মেয়াদে জাতীয় সংসদে টানা ১০টি বাজেট উত্থাপনের অনন্য রেকর্ড গড়েন আবুল মাল আবদুল মুহিত। একটানা এত বেশি বাজেট দেশের ইতিহাসে আর কোনো অর্থমন্ত্রী পেশ করতে পারেননি। এর আগে এরশাদ সরকারের অর্থ উপদেষ্টা হিসেবেও দুইটি বাজেট পেশ করেছিলেন মুহিত। সব মিলিয়ে তার উত্থাপন করা বাজেটের সংখ্যা ১২টি। এটিও সর্বোচ্চ বাজেট উত্থাপনের রেকর্ড। তবে বিএনপির সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত সাইফুর রহমানও ১২টি বাজেট উত্থাপন করেছেন সংসদে।
সারাবাংলা/জিএস/এনএস/টিআর