‘আঁধার কাটিয়ে আলোর রূপ প্রতিষ্ঠাই রবীন্দ্র দর্শনের মূল ভিত্তি’
৮ মে ২০২২ ২২:১৮
ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সত্য ও সুন্দরের উন্মেষ ঘটিয়ে আঁধার কাটিয়ে আলোর রূপ প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে রবীন্দ্র দর্শনের মূল ভিত্তি। প্রেম, ভালোবাসা, প্রার্থনা, মানবতা, সৃষ্টিকর্তা প্রভৃতি বিষয়ের নিগূঢ় সম্মেলন রবীন্দ্র লেখনিতে সমুজ্জ্বল।
রোববার (৮ মে) কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহের রবীন্দ্রকুঠিবাড়ি প্রাঙ্গণে আয়োজিত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন কুষ্টিয়া এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর, স্মারক বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সনৎ কুমার সাহা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জও বক্তৃতা করেন। এছাড়া কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম অনুষ্ঠানসংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ তার সাহিত্যজীবনের এক উল্লেখযোগ্য সময় কাটিয়েছেন শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে। এ সময়ের রচনাসমূহ বাংলা সাহিত্যে এক অমূল্য সংযোজন। যা বাংলা ও বাঙালিকে একইসঙ্গে গৌরবান্বিত ও সমৃদ্ধ করেছে। শিলাইদহ পর্বে কবি লিখেছেন সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালি, ক্ষণিকাসহ অসংখ্য কবিতা। লিখেছেন অর্ধশতাধিক ছোটগল্প এবং ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরাদেবীর কাছে লিখিত পত্রগুচ্ছ ‘ছিন্নপত্র’র ছাপ্পান্নটি পত্র।’
স্পিকার বলেন, “বাংলার অপূর্ব সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েই কবিগুরু লিখেছেন ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’- যা বঙ্গবন্ধু পরবর্তী সময়ে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করেন। তিনি লিখেছেন, ‘আজি বাংলা দেশের হৃদয় হতে কখন আপনি, তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী’- বাংলা ও বাঙালির প্রতি রবীন্দ্রনাথের আবেগ এগুলোর মাধ্যমেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।”
তিনি বলেন, ‘বিশ্বকবির লেখায় যেমন সামাজিক অনাচার, অবিচার, অত্যাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ রয়েছে, তেমনি আছে সমাজে নারীর অবস্থান, সম্মান ও নারী অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার ডাক।’ তিনি রবীন্দ্রনাথকে জানার মাধ্যমে জীবনবোধ জাগ্রত করে শোষণ, বৈষম্যহীন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে অগ্রসর হতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
কুঠিবাড়িতে উপস্থিত হয়ে স্পিকার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একটি বকুল গাছ রোপন করেন এবং আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা, জেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, স্থানীয় জনসাধারণ, সাংস্কৃতিক ও গণমাধ্যমকর্মীসহ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম