বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে ৪৪ হাজার কোটি টাকা
৯ মে ২০২২ ২৩:০৮
ঢাকা: আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রাক্কলন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এর মধ্যে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। ফলে আগের বাজেটের তুলনায় আগামী বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য বাড়ছে ৪৪ হাজার কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীন রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপি’র ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের মূল বাজেটে এই লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে নতুন বাজেটে কেবল এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে ৪০ হাজার কোটি টাকা, যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি। তবে পরিমাণে বাড়লেও জিডিপি অনুপাতে এই পরিমাণ কিছুটা কমেছে। কারণ চলতি অর্থবছরের এই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা জিডিপি’র ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।
এনবিআরের অধীন রাজস্ব আদায়ের উপখাতগুলোর মধ্যে আয়কর খাতে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা, শুল্ক খাতে ৪২ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) খাতে ২ লাখ ৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাতে ৫ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন- সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ছে ৫৩৮৬ কোটি টাকা
অন্যদিকে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে এনবিআর-বহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং কর-বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এই দুই খাতে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে যথাক্রমে ১৬ হাজার কোটি টাকা ও ৪৩ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে নতুন বাজেটে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে যথাক্রমে ১৩ শতাংশ ও ৫ শতাংশ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানিয়েছে, আাগামী বাজেটে সার্বিক ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। এটি জিডিপি’র ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সার্বিক ঘাটতি জিডিপি’র ৬ দশমিক ২ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। সে হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ জিডিপি অনুপাতে কিছুটা কমলেও টাকার অঙ্কে ঘাটতি বাড়ছে ৩০ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা। কেননা, চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন- রেকর্ড ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকার বাজেটের প্রস্তাবনা
অন্যদিকে ঘাটতি বাজেট অর্থায়নে আগামী ২০২২-২১ অর্থবছরে ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে নেওয়া হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা ৩৭ হাজার কোটি টাকা এবং এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে ব্যাংক বহির্ভূত খাত ও সঞ্চয়পত্র— উভয় দিক থেকেই তিন হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা প্রাক্কল করা হয়েছে নতুন বাজেটের খসড়ায়।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৯ জুন (বৃহস্পতিবার) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সংসদে পেশ করবেন। এটি হবে অর্থমন্ত্রীর টানা চতুর্থ এবং বাংলাদেশ সরকারের ৫২তম বাজেট।
এবার বাজেটের প্রাথমিকভাবে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ হাজার কোটি টাকা।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর