বাজেটে শিল্প কারখানার দিকে বেশি নজর দিতে হবে
৬ জুন ২০২২ ২৩:০০
ঢাকা: আসন্ন বাজেটে শিল্প কারখানার দিকে বেশি নজর দিতে হবে। আমরা যদি শিল্প কারখানাগুলোতে সঠিকভাবে কাজ না করে শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে না পারি, তাহলে আবার সামনের দিকে ঝুঁকিতে পড়ে যাব। এজন্য আসন্ন বাজেটে শিল্প কারখানার দিকে বেশি নজর দেওয়া উচিত।
আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সংসদে পেশ হবে ৯ জুন। বাজেট ঘিরে সারাবাংলা ডটনেটের ধারাবাহিক আয়োজন ‘কেমন বাজেট চাই’র এই পর্বে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে এবারের বাজেট প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেছেন।
সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটে প্রথমত আমাদের সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। আমাদের অর্জনগুলোকে সুসংহত করতে হবে এবং সামনে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টি দিতে হবে। শিল্প খাতে উন্নয়ন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। একটি দেশে যদি শিল্প খাত ভালো না করতে পারে, তাহলে সে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। তাই শিল্প কারখানার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। একইসঙ্গে এই খাতে প্রণোদনাও বেশি দিতে হবে।
শিল্প খাতের মধ্যে পাট ও সিরামিকসে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর। তিনি বলেন, পাটকে আবার নতুন করে জাগাতে হবে। পাট আমাদের ঐতিহ্য। তাছাড়া অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশের বাজার থেকেও পাটপণ্যে ভালো উপার্জন আসতে পারে। এ বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন-
- নন-কটন রফতানিতে প্রণোদনা চাই
- রাজস্ব আহরণে আরও বেশি জোর দিতে হবে
- বাজেটে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে প্রাধান্য দিতে হবে
- নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে মূল্যস্ফীতি, ঠান্ডা রাখতে হবে ডলারের বাজার
- সফটওয়্যার ও আইটিএস খাতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতি রাখতে হবে
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরে সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আসন্ন বাজেটে সামাজিক খাতের মধ্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় নজর দিতে হবে। এসব খাতে জবাবদিহিতা বাড়াতে হবে। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নও জরুরি। বিভিন্ন সময় আমরা অসহায়ত্বের কথা শুনি। বাজেটে যদি এসব খাতে বরাদ্দ না বাড়ানো হয়, তাহলে উন্নতি সম্ভব নয়।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সময়মতো শেষ করা এবং প্রকল্পের ব্যয় না বাড়ানোকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, সরকারের বড় বড় প্রকল্প যেগুলো আছে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। যেসব প্রকল্পে মানুষের দৈনন্দিন জীবনমান বদলে যাবে, সেগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। বারবার ব্যয় বাড়লে এসব প্রকল্প প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। প্রাক্কলিত ব্যয়ে এবং সময়মতো প্রকল্প শেষ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। বাজেট বাস্তবায়ন করতে হবে, প্রকল্পের কাজও সময়মতো শেষ করতে হবে।
বাজেট বাস্তবায়নে রাজস্ব আয় নিশ্চিত করতে করহার না বাড়িয়ে বিশেষ করে প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়ানোর পক্ষে সালেহ উদ্দিন আহমেদ। এ ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
সালেহ উদ্দিন বলেন, করের হার না বাড়িয়ে আওতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়াতে হবে। এনবিআরকে এ বিষয়ে জোরদার পদক্ষেপ নিতে হবে। এনবিআর বারবার বলছে, সার্ভে করছে। এটি ঠিক না। তাদের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এনবিআরের জবাবদিহিতার আওতায় থাকতে হবে, সততার চর্চা করতে হবে। ভ্যাটে অনেক লিকেজ আছে। সেখানে প্রয়োজন অনুযায়ী কঠোর হতে হবে। এক কথায় আয়করের হার না বাড়িয়ে করজাল বাড়াতে হবে।
সারাবাংলা/এসজে/টিআর
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অর্থনীতিবিদ বাজেট ২০২২-২৩ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ