Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তার উন্নয়নের ধাক্কায় শহরের রাস্তায় নৌকা চালাতে হয়: রিফাত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৪ জুন ২০২২ ২৩:৪১

কুমিল্লা থেকে: কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত প্রথমবারের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জয়ের অংশগ্রহণ করছেন। অন্যদিকে প্রতিপক্ষ মনিরুল হক সাক্কু লড়ছেন নিজের হ্যাটট্রিক জয়ের জন্য। তবে দুই মেয়াদে মনিরুল হক সাক্কুর মেয়র হিসেবে ব্যর্থতার কারণে নিজের জয়ের বিষয়ে আশাবাদী আরফানুল হক রিফাত।

নগরীর জলাবদ্ধতার জন্য সাবেক মেয়রকে দায়ী করে আরফানুল হক রিফাত বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। তারা জানে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার মানেই উন্নয়নের নিশ্চয়তা। সাবেক মেয়র কী করেছেন, তাও সবাই দেখেছে। তার উন্নয়নের ধাক্কায় শহরে এখন নৌকা চলছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৪ জুন) সারাবাংলাকে এসব কথা বলেন মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। তিনি বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। তবে আমি বিশ্বাস করি, জনগণ এর জবাব দেবে। তাদের ভোটে কুমিল্লাবাসী আমাকে জয়ী করবে বুঝতে পেরে সাক্কু কালো টাকা ছড়াচ্ছেন। এমনকি আমার কর্মীদেরও টাকা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

আরও পড়ুন- ‘ঘোড়া বা নৌকা না, আমার প্রতিপক্ষ এমপি বাহার’

প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী বলেন, সাবেক মেয়রের পক্ষে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। নিজেদের ইমেজ রক্ষার জন্য নির্বাচন কমিশন একজন এমপিকে, মেয়র প্রার্থীকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন করে দিচ্ছেন। এটা আমি আশা করি না।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের ক্লিন ইমেজ তৈরি করার জন্য তারা কুমিল্লায় আমাকে জবাই করতে চাচ্ছে। তাদেরকে বলব, আপনারা সরকার পক্ষের কেউ না, বিরোধী পক্ষেরও কেউ না। সারাবিশ্বে আপনারা আপনাদের পরিচয় দিয়ে নিরপেক্ষভাবে কাজ করুন। কুমিল্লায় উনাদের প্রথম নির্বাচন, প্রথম পরীক্ষা এটা। এজন্য কি আমাকে জবাই দিয়ে উনারা প্রমাণ করবেন তারা নিরপেক্ষ?— প্রশ্ন রাখেন রিফাত।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, নৌকা মার্কার পক্ষে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ। দলে কোনো বিভেদ নেই। নৌকার পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। আশা করছি, মানুষ উন্নয়নের স্বার্থে নৌকাকেই তাদের পছন্দের প্রতীক হিসেবে বেছে নেবেন। তাই নৌকার জয় হবে।

আরও পড়ুন- কুসিক নির্বাচনের ‘চাঁদ রাতে’র আগেও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

মনিরুল হক সাক্কুর দুই মেয়াদের কার্যক্রম নিয়ে রিফাত বলেন, উনার উন্নয়নের ধাক্কায় শহরের রাস্তাতে এখন নৌকা চালাতে হয়। আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবসময়ই সোচ্চার। নির্বাচিত হলে আমি প্রথমেই তার দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করে কুমিল্লার মানুষের কাছে পৌঁছে দেবো। আর যদি মেয়র নির্বাচিত হতে না-ও পারি, তবুও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান একই থাকবে। আমি মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সেই স্থান থেকে হলেও আমি সাক্কুর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলব।

তিনি আরও বলেন, সাবেক মেয়র ক্ষমতায় থাকাকালে নিজের দুর্নীতি লুকিয়ে রাখতে তৎপর ছিলেন। এখন তিনি সাবেক মেয়র। এজন্য তার দুর্নীতির অনেক প্রমাণ হাতে এসেছে। আশা করছি, আমি নির্বাচিত হলে তার সব দুর্নীতির প্রমাণ হাতে পাব।

রিফাত বলেন, কুমিল্লার মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা ও যানজট। আমি নির্বাচিত হলে এক বছরের মধ্যে জলাবদ্ধতা ও যানজটের সমস্যার সমাধান করব। আমি ১১ দফার একটি লিফলেট মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে দিয়েছি। নির্বাচিত হলে সেগুলোর বাস্তবায়ন করব। এটাই আমার প্রতিশ্রুতি।

আরও পড়ুন- সাক্কুর হ্যাটট্রিকে রিফাত-বাধা, চমকে দিতে পারেন কায়সারও

তিনি বলেন, এমপি কখনো নগরভবনের দুর্নীতির জন্য দায়ী হতে পারে না। কারণ তিনি উন্নয়ন বরাদ্দ নিশ্চিত করেন এলাকার জন্য। সেটা খরচ করেন মেয়র। কিন্তু বিগত সময়ে যা বরাদ্দ এসেছে, তার বেশিরভাগই লুটপাট করেছেন সাক্কু। তিনি একজন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি। আমি তাকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছি— আসুন, টাউন হলে বসি। আপনার দুর্নীতির সব তথ্য প্রকাশ করব। আর প্রমাণ করতে না পারলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব। কিন্তু তিনি আমার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেননি। দুর্নীতিবাজ সাক্কুর কাছ থেকে এবার পরিত্রাণ চায় নগরবাসী। তিনি দুর্নীতির টাকায় স্ত্রীর নামে কানাডায় বাড়ি করেছেন।

প্রার্থী হিসেবে নিজাম উদ্দিন কায়সারকে নিয়ে কী ভাবছেন— এমন প্রশ্নের উত্তরে নৌকা প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, প্রার্থী হিসেবেই দেখছি। কারণ আমার কাছে সবাই সমান। আমি কাউকেই ছোট করে দেখছি না। আশা করছি, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

আরও পড়ুন- প্রথম নির্বাচনেই চ্যালেঞ্জের মুখে নতুন ইসি!

কুসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ জন প্রার্থী। এছাড়াও কাউন্সিলর পদে ১০৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই সিটিতে ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হবে। এই সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এটি তৃতীয় নির্বাচন। এর আগে দুই নির্বাচনেই মেয়র পদে ভোটে নির্বাচিত হন মনিরুল হক সাক্কু। প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং দ্বিতীয়বার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

আরফানুল হক রিফাত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন কুসিক নির্বাচন কুসিক নির্বাচন ২০২২

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর