বিজ্ঞাপন

‘ঘোড়া বা নৌকা না, আমার প্রতিপক্ষ এমপি বাহার’

June 14, 2022 | 11:26 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

কুমিল্লা থেকে: কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয় খুঁজছেন বিএনপি নেতা এবং এই সিটির দুই মেয়াদের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। তবে এই লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত কিংবা নিজ দলেরই আরেক নেতা ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সারকে বাধা মনে করছেন না সাক্কু। তার ভাষায়, এই নির্বাচনে তার প্রধান বাধা কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাকেই সবচেয়ে বড় অন্তরায় বলে ভাবছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে সারাবাংলাকে এসব কথা বলেন সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। তিনি বলেন, সংসদ সদস্য হিসেবে বাহার সাহেব সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করছেন। তবে যত কৌশল, যত বাধা আসুক, সবকিছু পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমি আফজাল খান ও তার মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমার বিপক্ষে নির্বাচন করেছি। বাহার ভাইয়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো ছিল না বিধায় আমার জন্য খেটেছেন। স্বার্থের কারণে দুই মেয়াদে উনি আমার জন্য খেটেছেন। এখন উনিই আমার বাধা।

কুমিল্লা সিটির সাবেক এই মেয়র বলেন, অনেকে বলে, আমি নাকি ৪০ শতাংশ নিয়েছি কাজ দেওয়ার জন্য। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ দেওয়া হয়। কাজ পাওয়ার পর দেখা যায় কেউ জাতীয় পার্টি, কেউ বাহার ভাইয়ের গ্রুপ করে, আবার কেউ আমার গ্রুপ করে। তারা তো ই-টেন্ডারে কাজ পায়। এখানে আমার কী করার আছে?

আরও পড়ুন- কুসিক নির্বাচনের ‘চাঁদ রাতে’র আগেও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

বিজ্ঞাপন

নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়ে সাক্কু বলেন, সিইসি বাহার ভাইকে একটি চিঠি দিয়ে উল্টো বিপদে পড়ে গেছেন। এখন বেইজ্জতি কি বাহার ভাই হইছে, নাকি সিইসি হইছে— বুঝতে পারলাম না। তারা বলছে, বাহার ভাই লজ্জা পাইছে। আর বাহার ভাই বলছেন, আমার মতো আমি চলতাছি। এখন কে হইছে (লজ্জিত), আমি জানি না। আইন কোথায় চলে, আমি জানি না।

তিনি বলেন, ভোটারদের মতো আমিও বিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত। বিশেষ করে এখন থেকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে যে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হবে না। নৌকার লোকজন নিজেদের কর্মীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী হবে। তবে আমি মনে করি, ভোটাররা ভয়কে জয় করে কেন্দ্রে চলে গেলে দুর্বৃত্তরা পালানোর পথ খুঁজে পাবে না।

প্রার্থী হিসেবে নিজাম উদ্দিন কায়সারকে নিয়ে তেমন ভাবছেন না জানিয়ে সাক্কু বলেন, নির্বাচন আর সাংগঠনিক বিষয় এক না। ভোটের বিষয় আলাদা। ভোট দেবে জনগণ, আর রাজনীতি করবে কর্মীরা। তিনি (স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার) হঠাৎ এসে প্রার্থী হয়ে গেছেন। এখন ভোট পেতে খালেদা জিয়ার নাম বিক্রি করছেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমি দুইবারের মেয়র, মানুষ আমাকে চেনে। আশা করছি, এই কারণে আমার ভোট ব্যাংকে কোনো প্রভাব পড়বে না।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- সাক্কুর হ্যাটট্রিকে রিফাত-বাধা, চমকে দিতে পারেন কায়সারও

তিনি বলেন, আমি ৪২ বছর ধরে রাজনীতি করি। দুই বারের সিটি মেয়র। এর আগে পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র ছিলাম। গত ১৬ বছর জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ মানুষের সঙ্গেই আছি। মানুষ আমাকে আপন করে নিয়েছে। আমিও মানুষকে আপন করে নিয়েছি। এবারের নির্বাচনে সাধারণ ভোটাররাই আমার জন্য কাজ করছে। ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমার বয়স হয়ে গেছে। সামনের বার হয়তো শরীর সুস্থ নাও থাকতে পারে। আর আমি বিগত দিনে কম বরাদ্দের কারণে নগরীর অনেক উন্নয়ন করতে পারিনি। এবার আমার শেষ সময়ে এসে সরকার থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। এসব টাকার কাজ আগামী তিন বছরে বাস্তবায়ন হবে। কাজগুলো হলে নগরীর প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা ও যানজট দূর হবে। নগরীর চেহারাই বদলে যাবে। যেভাবেই হোক, আমি টাকাগুলো বরাদ্দ এনেছি। তাই শেষবারের মতো নির্বাচিত হয়ে কাজগুলো নিজের হাতেই করতে চাই, যেন আগামী প্রজন্ম বলতে পারে মেয়র সাক্কু এই কাজগুলো করে গেছেন।

আরও পড়ুন- প্রথম নির্বাচনেই চ্যালেঞ্জের মুখে নতুন ইসি!

বিজ্ঞাপন

কুসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ জন প্রার্থী। এছাড়াও কাউন্সিলর পদে ১০৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই সিটিতে ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হবে। এই সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এটি তৃতীয় নির্বাচন। এর আগে দুই নির্বাচনেই মেয়র পদে ভোটে নির্বাচিত হন মনিরুল হক সাক্কু। প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং দ্বিতীয়বার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

ফাইল ছবি

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন