বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রমে নৈতিক শিক্ষা যুক্তের আহ্বান ইউজিসি’র
৩০ জুন ২০২২ ২১:১৭
ঢাকা: শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতার চরম অভাব দেখা দিচ্ছে জানিয়ে তাদের মূল্যবোধের অবক্ষয় রুখতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষার বিষয়টি যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্চুরী কমিশন (ইউজিসি)। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সিটিজেন চার্টার বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের অবহিতকরণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম এ আহ্বান জানান।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় কমিশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ, উপ-পরিচালক, সিনিয়র সহকারী পরিচালকসহ ২৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিটিজেন চার্টারের ফোকাল পয়েন্ট ও দৈনিক বণিক বার্তার নিজস্ব প্রতিবেদক সাইফ সুজন অংশ নেন। কমিশনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও সিটিজেন চার্টারের ফোকাল পয়েন্ট মো. ইউসুফ আলী খান কর্মশালা পরিচালনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রফেসর দিল আফরোজা বেগম বলেন, ‘সাম্প্রতিককালে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে মূল্যবোধের অবক্ষয় পরিলক্ষিত হচ্ছে। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক অভিভাবকতুল্য ও বন্ধুসুলভের পরিবর্তে বৈরি ভাব বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের নৈতিক অধঃপতন ঠেকাতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষার বিষয়টি যুক্ত করা জরুরি। পাশাপাশি বিভাগের সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের আচরণের বিভিন্ন দিক মূল্যায়নে কোর্স শিক্ষকরা নম্বর বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কেন সহিংস আচরণ করছে। আচরণের বিচ্যুতিইবা কেন ঘটছে- সেটি শিক্ষকদের খতিয়ে দেখতে হবে। শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন মনোবিজ্ঞানী বা ছাত্র উপদেষ্টা নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে সাংস্কৃতিক চর্চা হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকে পড়ালেখার ক্ষতি বলে মনে করেন।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্ত চিন্তার বিকাশের পরিবেশ তৈরি এবং সাংস্কৃতিক চর্চা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দ্রুত গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ইউজিসি’র এ সদস্য বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার পরে কোন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ ও পাঠদান শুরু হবে সেটি সুনির্দিষ্ট করা নেই। এ কারণে একজন শিক্ষার্থীকে এক থেকে দুই বছর মূল্যবান সময় নষ্ট করতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ঠিকমতো হচ্ছে কি না, গুণগত শিক্ষা পাচ্ছে কি না, একইসঙ্গে র্যাংকিংয়ে যাওয়ার শর্তগুলো পূরণের দিকেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নজর রাখতে হবে।’
ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়কে পেপারলেস অফিসে রূপান্তরে ইউজিসি’র কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’ এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে এবং দাফতরিক কাজে গতি আসবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উচ্চশিক্ষা সেবা ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদ করার অনুরোধ জানান।
এছাড়া উচ্চশিক্ষা পরিবারের সকলকে করোনার সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেবা প্রদান এবং সেবায় সন্তুষ্টি অর্জনে সর্বদা সচেষ্ট থাকার অনুরোধ করেন ড. ফেরদৌস জামান।
সারাবাংলা/টিএস/পিটিএম