সরকারিভাবে ১০ অক্টোবর স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস ঘোষণার আহ্বান
২ জুলাই ২০২২ ২০:৩৭
ঢাকা: দেশে প্রতিবছর ১৫ হাজারের বেশি নারী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন, যাদের বড় একটি অংশ কম বয়সী। স্তন ক্যান্সার রোধে পরিবার থেকে সচেতনতার কার্যক্রম চালানো প্রয়োজন। ২০১৩ সালে স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম গঠন করা হয়। এর উদ্যোগে প্রতিবছর ১০ অক্টোবর বাংলাদেশে স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে আসছে। গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রা, সচেতনতা ও ফ্রি স্ক্রিনিংসহ নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই দিবস পালন করা হয়। আর এই দিনটিতে সরকারিভাবে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (২ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম আয়োজিত ‘স্তন ক্যানসার সচেতনতায় চাই সামাজিক আন্দোলন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন।
বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য বলেন, দেশে স্তন ক্যানসারে এক সময়ে ২২ হাজার নারী আক্রান্ত হত, বিনা চিকিৎসায় মারা যেত ৭০ ভাগ। সচেতনতা বাড়াতে বর্তমানে সেটি কমেছে। শুরু থেকে আমরা সব ধরনের রোগেরই চিকিৎসা দিতে চেয়েছি।
তিনি বলেন, সরকারের সহযোগিতায় ৯২ জন নারী চিকিৎসককে সার্জারি চিকিৎসায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন জেলা পর্যায়েও স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, স্তন ক্যানসারের সার্জিক্যাল অপারেশনের জন্য যাতে কাউকে অন্য কোনো দেশে না যেতে হয় সেই চেষ্টা চলছে। তবে আমাদের গ্রামাঞ্চলে সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমাদের মায়েদের যদি সচেতন করতে পারি, তাহলে মেয়েসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও সচেতন হবে।
তিনি আরও বলেন, ক্যানসার বিশেষ করে স্তন ক্যানসারের রোগী গ্রামে-গঞ্জে খুঁজে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বিদেশের থেকে আমাদের দেশীয় চিকিৎসা অনেকটা ভালো।
ডা. ছয়েফ উদ্দিন বলেন, সরকারের কাছে আবেদন, ১০ অক্টোবরকে সচেতনতা দিবস ঘোষণা করতে হবে। সবার উদ্যোগে কিংবা সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এ দেশ একদিন ক্যানসার মুক্ত হবে এটাই আশা করছি।
এদিন আলোচনা সভায় জানানো হয়, দেশে প্রতিবছর ১৫ হাজারের বেশি নারী স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন, যাদের বড় একটি অংশ কম বয়সী। এ জন্য এটি রোধে পরিবার থেকে সচেতনতার কার্যক্রম চালাতে হবে। একইসঙ্গে স্কুল-কলেজ পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে পাঠ্যক্রমে এ বিষয়টি যুক্ত করতে হবে বলেও মনে করছেন ক্যানসার চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা।
ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১৩ সালে স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম গঠন ও এর উদ্যোগে প্রতিবছর ১০ অক্টোবর বাংলাদেশে স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে আসছে। গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রা, সচেতনতা ও ফ্রি স্ক্রিনিংসহ নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই দিবস পালন করা হয়। এ বছর দিবস উদ্যাপিত হবে দশমবারের মতো। একযোগে ৬৪ জেলায় ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের সম্পৃক্ত করে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে বলেও ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন সোসাইটি ফর হেলথ প্রমোশন লিংকসের সভাপতি ডা. হালিদা হানুম আক্তার। এতে সভাপতিত্ব করেন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিবসহ অন্যান্যরা।
সারাবাংলা/এসবি/এনএস
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস