নগরভবনে বিনা দরকারে বাতি, ফ্যান, এসি না চালানোর নির্দেশ আতিকের
২১ জুলাই ২০২২ ১৮:২৩
ঢাকা: উত্তর সিটি করপোরেশন ডিএনসিসির কার্যালয়ে বিনা প্রয়োজনে বৈদ্যুতিক বাতি, পাখা ও এসিসহ অন্যান্য সব বৈদ্যুতিক যন্ত্র বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেছেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর গাবতলী পাইকারী কাঁচাবাজার এলাকা পরিদর্শনে এসে তিনি এ সব কথা বলেন। কারওয়ান বাজারের পাইকারি কাঁচাবাজার গাবতলীতে স্থানান্তরের লক্ষ্যে এই পরিদর্শন করেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথোপকথনে মেয়র বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী বিদ্যুতের সংকট তীব্র হচ্ছে। চলমান এই সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুতের ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে যে নির্দেশনা দিয়েছেন আমাদের সবাইকে তা মেনে চলতে হবে। ঢাকা উত্তর সিটি ককরপোরেশনে আমার কক্ষ থেকে শুরু করে প্রতিটি কক্ষেই কর্মকর্তারা রুমে প্রবেশের পূর্বে সব বাতি, পাখা, এসি বন্ধ রাখবে। কক্ষে প্রবেশের পরে প্রয়োজন অনুসারে সেগুলো চালু করবে। তবে এসির তাপমাত্রা কোনোভাবেই ২৫ (পঁচিশ) এর নিচে রাখা যাবে না।’
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘প্রত্যেককে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। বিদ্যুতের অপচয় বন্ধ করে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে খরচ অনেকাংশে কমানো সম্ভব। দয়া করে কেউ অফিস ও বাসা বাড়িতে বিদ্যুতের অপচয় করবেন না।’
কারওয়ান বাজারের পাইকারি কাঁচাবাজারটি ঢাকার প্রান্তে স্থানান্তরের যৌক্তিকতা তুলে ধরে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ঢাকাকে একটি পরিকল্পিত ও আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পাইকারী কাঁচাবাজারগুলোকে শহরের প্রান্তে নিয়ে যেতে হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি বাজারে আসা পণ্যবাহী গাড়িগুলো শহরে প্রবেশ না করলে যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে এবং পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যও হ্রাস পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কারওয়ান বাজারের পাইকারি কাঁচাবাজার গাবতলীতে স্থানান্তরের লক্ষ্যে আমরা সরেজমিনে পরিদর্শনে এসেছি। পাইকারী ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও আমরা আলোচনা করব। ব্যবসায়ীরা যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং ঢাকাকেও যেন আধুনিক ও পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তোলা যায় সেটি বিবেচনা করেই পরিকল্পনা করা হবে। সকল অংশীজনদের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে কী কী চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলো খতিয়ে দেখে তারপরেই সিদ্ধান্ত নেব।’
পরিদর্শনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি।
মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘কারওয়াবাজার অনেক আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখান থেকে সারা ঢাকা শহরের খুচরা বাজারগুলোতে পণ্য ডিস্ট্রিবিউশন হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা শাক-সবজি-মাছসহ অন্যান্য পণ্য কারওয়ান বাজারে নিয়ে আসেন তাদের জন্যও যেমন কষ্টকর তেমনি অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় ঢাকার অভ্যন্তরীণ খুচরা বাজারে কাঁচামাল পৌঁছাতে অনেক যানজট তৈরি হয়। কাওরানবাজার থেকে ঢাকার ভিন্ন পয়েন্টে সুবিধাজনক স্থানে কীভাবে স্থানান্তর করা যায় সেটা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। সবার প্রচেষ্টায় এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরও বলেন, ‘পরিকল্পিত এবং দৃষ্টিনন্দন ঢাকা গড়ায় আমাদের মূল লক্ষ্য।’
যেসব ব্যবসায়ীরা কারওয়ান বাজার থেকে চলে আসবেন তারা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন এবং মানুষেরও যেন ভোগান্তি না হয় সেদিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কাউকে হঠাৎ করে চলে যেতে বললে তার জন্য স্থানান্তর সহজ নয় কিন্তু তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট জায়গা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হলে তারা অবশ্যই যাবে। কাঁচাবাজার তিন তলা বা পাঁচতলা করা যৌক্তিক না। কিন্তু এখানে (গাবতলী) এ ধরনের ভবন করার কারণ উপরে ইলেক্ট্রিকসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি করা হয়।’
গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এবং ডিএনসিসি মেয়র গাবতলী কাঁচাবাজারের বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শনকালে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির কাউন্সিলর এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সারাবাংলা/আরএফ/একে