আমেরিকার যেমন ট্রেনিং, তেমন কার্যক্রম— র্যাব বিষয়ে শেখ হাসিনা
৬ অক্টোবর ২০২২ ১৭:০৬
ঢাকা: র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, র্যাব তো আমেরিকার পরামর্শে তৈরি। তারা পরামর্শ দিয়েছে, তাদের ট্রেনিং দিয়েছে। অস্ত্র-শস্ত্রও আমেরিকার দেওয়া।
র্যাবের অপরাধের অভিযোগ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘র্যাবকে আমেরিকার যেমন ট্রেনিং, তেমন কার্যক্রম। ট্রেনিংটা যদি ভালো হতো- এ বিষয়ে আমরা কী করতে পারি?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- এই নীতিতে আমরা বিশ্বাস করি। কারও সঙ্গে ঝগড়ায় যাই না।’
সদ্য সমাপ্ত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নানা সময়ে স্যাংশন দিয়েছে। আমাদের দেশের কিছু লোক আছে যারা স্থানীয় সিনেটর ও কংগ্রেস ম্যানকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকে। সেই সঙ্গে দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করতেই থাকে। এরা কারা, কোনো না কোনো অপরাধ করেই দেশ ছাড়ে কিংবা চাকরিচ্যুত।’
তিনি আরও বলেন, ‘একাত্তরে যারা দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তাদের বিচার তো আমরা করেছি। কিন্তু তাদের ছেলে-মেয়ে আছে। দেশ থেকে বিদেশে টাকা-পয়সা নিয়ে গেছে। তারা তো আর থেমে নেই। তারাও অপপ্রচার করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। র্যাব হোক, পুলিশ হোক তারা কোনো অন্যায় করলে বিচার হয়। কিন্তু তাদের দেশে তো কোনো বিচার হয় না। একটার বিচার হয়েছে। যখন লোকজন রাস্তায় নামল, তখন তারা ওই একটার বিচারই করেছে। আর কোনো বিচার হয় না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি গুম হয়েছে জিয়াউর রহমানের আমলে। আমরা গুমের তালিকা চাইলাম। তালিকা পাওয়া গেল ৭৬ জনের। ভারত থেকে কিছু নাগরিক পলাতক। গুমের তালিকায় তাদের নামও ছিল।’
‘আমেরিকা স্যাংশন দিয়েছে, সেটি তুলবে কি না জানি না। কিন্তু তারা যা ক্ষতি করেছে। এই স্যাংশন দেওয়ার অর্থ হলো সন্ত্রাসবাদের মদত দেওয়া। কেননা র্যাব জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ দমন করেছে। সন্ত্রাস দমনে কি তারা নাখোশ?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আফগানিস্তানে ৪০ বছর যুদ্ধ করল। শেষশেস তালেবানের হাতে ক্ষমতা দিয়েই চলে গেল। নিজেদের ব্যর্থতার কথা তো বলে না কোথাও। ভিয়েতনামে ৩০ বছর যুদ্ধ করল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ নিল। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে একের পর স্যাংশন দিচ্ছে। মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। এটি কেমন কথা? আমি জাতিসংঘেও বলেছি, এই যুদ্ধ থামাতে হবে।’
এর আগে, এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘের রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার সঙ্গেও কথা হয়েছে। রোহিঙ্গারা একের পর এক আত্মঘাতী হচ্ছে। নৌকায় উঠে মালয়েশিয়ায় যাবে বলে বেরিয়ে পড়ছে। রোহিঙ্গাদের কারণে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শরণার্থী সংস্থা রোহিঙ্গাদের জন্য কতটুকু করবে তা জানি না। আমরা তো রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। তাদের আমরা ফেলে দিতে পারি না। বৈদেশিক সহায়তা অনেক সীমিত হয়ে আসছে। আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। তাদের তো আর ফেলে দিতে পারি না। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি। আপনাদের লোক আপনাদের ফেরত নিয়ে যান। তাদের ফেরত নিয়ে যাওয়া উচিত।’
সারাবাংলা/ইউজে/একে