আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করছে লোডশেডিং
১১ অক্টোবর ২০২২ ১৯:২৮
ঢাকা: জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এ কারণে প্রভাব পড়ছে সরবরাহে। ফলে বাড়ছে লোডশেডিং। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আবহাওয়ায় পরিবর্তন না হলে পরিস্থিতি আপাতত পরিবর্তনের সুযোগ নেই। কারণ, বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বেশি। সেজন্য এই মুহূর্তে জ্বালানি আমদানি করা যাচ্ছে না। তবে শীত মৌসুম শুরু হলে বিদ্যুতের চাহিদা কমবে। তখন লোডশেডও কমে আসবে।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ সব কথা বলেন তিনি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমাদের ধারণা ছিল অক্টোবরে শীত শুরু হবে, তখন হয়তো বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসবে। তখন আমরা বিষয়টা ম্যানেজ করতে পারব। কারণ, আমরা তো নতুন করে জ্বালানি আনতে পারছি না। কিন্তু আবহাওয়ার যে অবস্থা তাতে চাহিদা একটুও কমেনি। আগের মতোই রয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম বিশ্ববাজারে হয়তো গ্যাসের দাম কমে আসবে। যদিও খোলাবাজারে কিছুটা কমেছে। কিন্তু আমাদের জন্য তাও অনেক বেশি। যে গ্যাস পাঁচ ডলারে কিনতাম, তা এখন ২৮ ডলারে পৌঁছেছে। এ দামে কিনতে গেলেও ৩৫ ডলার পরে যাচ্ছে প্রতি ইউনিট।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি ইউনিট গ্যাস ১১ টাকা বিক্রি করা হয় কমার্শিয়ালে, ১৬ টাকা শিল্পে, ৫ টাকা বিদ্যুতে। এটা অনেক বড় লোকসান। ভর্তুকি হিসেবে সরকার কত টাকা দেবে।’
বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য মতে, তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা ৭ হাজার মেগাওয়াট, গ্যাসভিত্তিক ১১ হাজার মেগাওয়াট। বাকি তিন থেকে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সোলার ও বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এর বাইরে ক্যাপটিভ পাওয়ার আছে চার হাজার, সেখানেও গ্যাস ব্যবহার হয়। জ্বালানি সংকটের কারণে এখন গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘জ্বালানি সংকটের কারণে তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলোও এখন পূর্ণ সক্ষমতায় সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বর্তমানে আট ঘণ্টার বেশি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। দিনে চালানো কেন্দ্র রাতে বন্ধ রাখা হয়। আর রাতে চালানো কেন্দ্র দিনে বন্ধ থাকে।’
এদিকে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে দৈনিক গ্যাস দরকার ১১০০ মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট। সে হিসেবে প্রতিদিন ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট থেকে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র বলছে, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম না কমলে এই সংকট ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। অবশ্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, এ সংকটের উন্নতি নভেম্বর থেকে হতে পারে। সেজন্য গ্রাহকদের ধৈর্য্য ধরার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
গত কয়েকদিনে রাজধানীসহ সারাদেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং প্রকট হয়ে উঠেছে। সকাল-দুপুর তো বটেই মধ্য, শেষ রাতেও চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। দুই ঘণ্টার জায়গায় ছয় থেকে সাত ঘণ্টাও লোডশেডিং হচ্ছে। এদিকে জ্বালানি সংকটসহ নানা কারণে ৩০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম