আমাদের ছেলেমেয়েরা একদিন বিশ্বকাপ খেলবে— আশাবাদ প্রধানমন্ত্রীর
২৩ নভেম্বর ২০২২ ২২:৪৯
ঢাকা: বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ খেলবে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বকাপে আমাদের কোনো অবস্থানই নেই। এটা অনেক কষ্টদায়ক। বিশ্বকাপের খেলা টেলিভিশনে দেখি আর ভাবি, কবে আমাদের ছেলেমেয়েরা এই বিশ্ব আসরে খেলবে।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকার বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসরের সমাপনী ও পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তঃস্কুল, আন্তঃকলেজ, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমাদের ছেলেমেয়েরা আরও বিকশিত হচ্ছে। এভাবেই তারা একদিন চূড়ান্ত উৎকর্ষতা অর্জন করে বিশ্বকাপে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হবে।’—
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ প্রাইমারি থেকে যে খেলাধুলার শুরু হয়েছে, সেখান থেকে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই একদিন আমরা বিশ্বে খেলাধুলায় উন্নত হতে পারব।’
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ১২টি ইভেন্টের অধীনে দেশের ১২৫টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৮৫০ জন নারীসহ প্রায় ৬ হাজার ৯৫০ জন অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার তৃতীয় সংস্করণের আয়োজন করে।
ফুটবল, ক্রিকেট, অ্যাথলেটিক্স, ভলিবল, বাস্কেটবল, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, কাবাডি ও দাবাসহ ১২টি ইভেন্টের অধীনে সেরা পারফরমারদের মধ্যে প্রায় ৭২০টি পদক বিতরণ করা হয়।
দেশের মেয়েরা সাফ গেমস ও এশিয়ান গেমসসহ বিভিন্ন বয়সভিত্তিক ফুটবল টুর্নামেন্ট ও ক্রিকেটে পারদর্শিতা দেখাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘ছেলেরাও একদিন পারবে। সেজন্য সরকার বিকেএসপির শাখা আটটি বিভাগে করে দিচ্ছে। যাতে সব ইভেন্টে খেলোয়াড়রা উৎকর্ষতা অর্জন করতে পারে। আর এজন্য প্রশিক্ষণ একান্ত অপরিহার্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সীমিত সুযোগের মধ্যেও এক্ষেত্রে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং সীমিত সুযোগের মধ্যেও আমাদের ছেলেমেয়েরা যথেষ্ট ভালো করছে এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে।’
খেলাধুলা ও শরীরচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতা আমাদের যুবসমাজকে পথ দেখায়। শিশু বা কিশোর বয়স থেকে যত বেশি খেলাধুলা করবে, তত বেশি মন বড় হবে, শরীর ভালো থাকবে। তাছাড়া এই যে চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য একের সঙ্গে অপরের যে প্রতিযোগিতা, এই প্রতিযোগিতাই আমাদের ছেলেমেয়েদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে, নিজেদেরও আত্মশুদ্ধি হবে এবং তারা সুন্দরভাবে বাঁচবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাদক, জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাস চাই না। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। উন্নতি ও প্রগতিতে বিশ্বাস করি। শিক্ষা-দীক্ষা, খেলাধুলা এবং সংস্কৃতি চর্চার মতো বিষয়গুলোয় সবসময় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা লাগে। পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এগুলো কখনো বিকশিত হয় না।’
খেলাধুলার সঙ্গে নিজের পরিবারের সংশ্লিষ্টতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এমন একটি পরিবারে জন্মেছি, যেটি ক্রীড়া অন্তঃপ্রাণ পরিবার। আমার দাদা ফুটবলার ছিলেন, দাদার ছোট ভাই তিনিও ফুটবলার ছিলেন। আমার বাবাও ফুটবলার ছিলেন। আমার দাদা যখন অফিসার্স টিমের ক্যাপ্টেন, তখন আমার বাবা ছিলেন ছাত্রদের ক্যাপ্টেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, তার কাছেই আমরা শুনেছি একদিকে বাবার টিম, আরেকদিকে ছেলের টিমের খেলা হতো। নিজের অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু খুব চমৎকারভাবে সে কথা লিখে গেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সবসময় চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী, অত্যন্ত গুণী। একটু সুযোগ পেলেই তারা যে অসাধ্য সাধন করতে পারে, সেটা আমি বিশ্বাস করি।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সচিব মেজবাহ উদ্দিন, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ খেলোয়াড় ও আয়োজকরা।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম