এশিয়ান ইউনিভার্সিটির পাহাড় কেটে সড়ক নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ
৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:২৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের (এইউডব্লিউ) পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউনিভার্সিটির সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরির কাজ করছিল বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। এ বিষয়ে আরও তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে পাহাড় কাটা প্রতিরোধে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার লিংক রোডে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক এতে নেতৃত্ব দেন।
অভিযানে দেখা যায়, আরেফিন নগর এলাকায় ইউনিভার্সিটির মালিকানায় থাকা পাহাড়ের কিছু অংশ কেটে সড়ক নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে পাহাড় কেটে সড়ক কারা বানাচ্ছে সেটি তদন্ত করে দেখেন। ইউনিভার্সিটির নিয়োগ দেওয়া শ্রমিকরাই সেখানে কাজ করছেন।
জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাহাড় কেটে রাস্তা বানানোর বিষয়টি জানতে চেয়েছিলাম। তারা জানিয়েছে, সিডিএ পাহাড় কেটে এই সড়ক বানিয়েছে। তারা শুধু সড়কের কারণে ভেঙে যাওয়া পাহাড়ের বিভিন্ন অংশ মেরামত করছে।’
‘নকশা অনুযায়ী সড়কটির অবস্থান পাহাড়ের অপর পাশে থাকলেও দূরত্ব কমানোর জন্য সেটি ওই পাহাড় দিয়ে নেওয়া হয়েছে। যেহেতু মালিকানা ইউনিভার্সিটির, সেজন্য সিডিএ আগে তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র তারা দিয়েছে। এ বিষয়ে সিডিএ’র সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণ করে আরও তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে আমরা এ সংক্রান্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি।’
এদিকে, একই অভিযানে চট্টগ্রাম নগরীর ফয়’সলেক এবং লেকসিটি এলাকায় বিস্তির্ণ পাহাড় কেটে সমতল বানানোর প্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসনের টিম। ফয়’সলেক এলাকায় পাহাড় কাটার অপরাধে ভূমির ক্রেতা ও বিক্রেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। লেকসিটি এলাকায় ভূমির মালিকানা নির্ধারণে তদন্ত চলছে।
জানা গেছে, ফয়’সলেক এলাকার সালামতুল্লাহ বাইলেনে স্বপন কুমার ভট্টাচার্য নামে এক ব্যক্তির কাছে টিলা শ্রেণির একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি বিক্রি করেন ইয়াসিন উল্লাহ রাশেদ। ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক জানান, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে মিলে টিলার প্রায় পুরো অংশ কেটে সমতল বানিয়ে ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অভিযানে পাহাড় কাটার সত্যতা পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে খুলশী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অন্যদিকে, নগরীর আকবরশাহ থানার লেকসিটি এলাকায় একাধিক ব্যক্তির মালিকানাধীন প্রায় নয় একর জায়গা আছে। টিলা শ্রেণির এই ভূমির অর্ধেকেরও বেশি কেটে ফেলা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক জানিয়েছেন, অভিযানে ভূমির মালিকদের চিহ্নিত করা যায়নি। তদন্ত করে মালিক চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম