উপকূলে বেড়েছে ডলফিনের বিচরণ, পর্যটনে নতুন সম্ভাবনা
২৩ মার্চ ২০২৩ ১০:৩০
কক্সবাজার: বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূলে বেড়েছে ডলফিনের বিচরণ। প্রায়ই দল বেঁধে উপকূলের কাছে এসে নীল জলরাশিতে খেলা করছে ডলফিন। আর সেই অপূর্ব দৃশ্য দেখে মুগ্ধ জেলে ও স্থানীয়রা। বন্ধুভাবাপন্ন সুন্দর এই সামুদ্রিক প্রাণিকে ঘিরে দেশের পর্যটন খাতে নতুন এক দ্বার উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সোনাদিয়া ও পেঁচারদ্বীপ উপকূলে প্রায়ই ইরাবতি ও স্পিনার জাতের ডলফিনের খেলাধুলার অপূর্ব দৃশ্য চোখে পড়ে জেলে-স্থানীয়দের।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের জরিপ অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে ৭ জাতের ১৬ হাজার ডলফিন শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৬ হাজার ইরাবতি ডলফিন। এই জাতটি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বাংলাদেশে। যা কক্সবাজারে সমুদ্রেও দেখা যাচ্ছে।
ডলফিনের এমন দৃশ্যে মুগ্ধ লাইফ গার্ড ও স্থানীয়রা বলছেন, বন্ধুভাবাপন্ন এই প্রাণীর নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিতের পাশাপাশি কোনো কারণে যেন বিপন্ন না হয় সে ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত লাইফ গার্ড সাইফুল ইসলাম জানান, প্রায়ই ডলফিন দেখা যায়। তবে বেশি দেখা গিয়েছিল করোনার কালে। মেশিনের শব্দ বা লোকজনের সমাগম স্থানে ডলফিন আসতে চায় না। তাদের নিরাপদ যাতায়ত ও বিচরণক্ষেত্র নিশ্চিত করলে আরও ডলফিন আসবে।
বিচ বাইকার মোহাম্মদ রুবেল মিয়া জানান, ডলফিন আরও কাছে আসতে চায়। কিন্তু অনেক পর্যটক বিচ বাইক নিয়ে সমুদ্র পাড় থেকে কিছু দূরে যাওয়ায় ইঞ্জিনের শব্দ এবং মানুষের সমাগমের কারণে ডলফিন দূরে চলে যায়।
স্থানীয় যুবক এইচ এম নজরুল জানান, প্রায়ই দেখা যায় মৃত ডলফিন ভেসে আসছে। জেলেদের জালে আটকা পড়াসহ নানা কারণে এমনটা হচ্ছে। তবে সম্ভাবনার জায়গা হচ্ছে ডলফিনের সমাগম পর্যটকদের জন্য নতুন এক মাত্রা যুক্ত করেছে।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার জানান, বঙ্গোপসাগরে ডলফিনের সংখ্যা বেড়েছে বলেই উপকূলে এদের হরহামেশা দেখা মিলছে। এখন পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে সাত প্রজাতির ডলফিন সনাক্ত করা হয়েছে। স্তন্যপায়ী প্রাণীটির বিচরণক্ষেত্র, আবাসস্থল নিয়ে একটি বিস্তৃত গবেষণার কথা ভাবছেন তারা।
তিনি আরও জানান, ডলফিন মানুষের সাথে খেলা করতে পছন্দ করে। অনেক ভ্রমনপিপাসু মানুষ ডলফিনকে প্রকৃতিতে দেখার জন্য বিচরণক্ষেত্রে যান। এই প্রাণীটি সম্পর্কে আরও গবেষণা, তাদের বিচরণক্ষেত্র চিহ্নিত করা ও সংরক্ষণে উদ্যোগ নিতে হবে। ডলফিন সংরক্ষণ ও পর্যটকদের দেখার সুযোগ তৈরির মাধ্যমে পর্যটন খাতে নতুন একটি দ্বার উন্মোচিত হতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সারাবাংলা/এমও